বসন্ত এবার বিদায় নেবে। দক্ষিণের হাওয়ায় সে এবার পাড়ি দেবে উত্তরের দিকে। বসন্তের সাথী গাছের পাতাগুলোও একটু একটু করে হলুদ হয়ে ঝড়ে পড়ছে। হালকা মেঘলা আকাশ আর হালকা হাওয়ায় বোঝা যাচ্ছে বসন্ত এবার বিদায় নিচ্ছে। আর বসন্তের বিদায় মানেই গৌরী মূর্তির বিসর্জন।
আজ দক্ষিণ কলকাতার নারীদের জন্য এক বিশেষ উৎসবের দিন। বছর পুরো বছর মন চেয়ে অপেক্ষা করে থাকা এই দিনটি হল গৌরীর বিসর্জন। এই উৎসবটি বাংলার নারীদের জন্য বিশেষ ভাবে উদযাপন করা হয়। গৌরীর বিসর্জনের দিনটিতে সকাল থেকেই বিবাহিতা নারীরা হলুদ শাড়ি আর সোনালী গয়নায় সেজে ওঠেন।
সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে প্রথমে অঞ্জলি দেওয়া হয় গৌরী-শিবকে। সারা বছর যাদের পূজা করা হয়, তাদেরকে আজ বিদায় দেওয়ার দিন। স্নান সেরে তাই সকালের অঞ্জলিটাও বিশেষ। অঞ্জলির পর শুরু হয় বরণ্ডলার আয়োজন। বরণ্ডলা হল বিবাহিতা নারীদের আনন্দ উৎসব। যেখানে মহিলারা একসাথে গান-বাজনা নাচ-গান করে আনন্দ করেন। বরণ্ডলা শুরু হয় অল্প সংখ্যক মহিলা নিয়ে। তারপর ক্রমে ক্রমে সংখ্যাটা বাড়তে থাকে। গানের সুর আর নাচের তালের সাথে সাথে বাড়ে মহিলাদের উচ্ছ্বাস।
বরণ্ডলার পর শুরু হয় গৌরী-শিবের বিসর্জন। সন্ধ্যার আগেই বিবাহিতা নারীরা গৌরী-শিবকে নিয়ে যান পুকুর বা নদী তীরে। সেখানে সর্বপ্রথম পুজোরতালাগুলি ভেঙে ফেলা হয়। তারপর মহিলারা হাতে হাত রেখে গৌরী-শিবকে বিসর্জন করেন। গৌরী-শিবকে বিসর্জনের সময় মহিলাদের চোখের কোনে একটু জল দেখা যায়। কারন আবার পরের বছর গৌরী এসে তাদের সংসারে সুখ-শান্তি আর সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে এই আশায়ই বিবাহিতা নারীরা আবার নতুন করে পুজোর প্রস্তুতির অপেক্ষা করতে থাকবেন।