আড্ডা দেবেন সিসি ক্যামেরার নিচে




সিসি ক্যামেরার নিচে অফিসে বসে কদিন আগে একটা মিটিং হয়েছিল। ওখানে আড্ডাটি জমে উঠেছিল লোকসভার ডেপুটি স্পিকারের কথায়। তিনি মুখ্য বক্তা ছিলেন। তিনি হলেন বিরসামুন্দম।

তাঁর আসল নাম রামচন্দ্র সিংহ। বিজেপির এই সংসদ সদস্য মধ্যপ্রদেশের খন্ডোয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। এই কদিন আগের মিটিংয়ে তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, সিসি ক্যামেরার নিচে অফিসে বসে আড্ডা দেওয়া মানে দেশের বিশ্বাসের সঙ্গে প্রতারণা। তিনি রীতিমতো বক্তৃতা করেছেন সে বিষয়ে। তাঁর কথাগুলি কল্পনাকে পালক দিয়েছে। ভারতবর্ষের শীর্ষ রাজনীতিতে কতটা আড্ডা হয় সে নিয়ে জল্পনা এ বার সীমানা পেরিয়ে যাবে জানি না, তবে সিসি ক্যামেরার কাছে আড্ডা দেওয়াটা কিন্তু নতুন কিছু নয়। আর সে আড্ডায় যে কী হয় সেটাও অনেকেরই অজানা নয়।

আড্ডা কিন্তু মন্দ কিছু নয়। আড্ডা জানা আছে, আলোচনা, শেয়ারিং অব আইডিয়াস ইত্যাদি। তবে হ্যাঁ, আড্ডা কী ভাবে, কখন এবং কোথায় হয় সেটাই প্রশ্ন। করপোরেট জগত থেকে হোমমেকার সব জায়গায় আড্ডা বসে। তার পাশাপাশি রাজনীতির আড্ডারও একটা আলাদা ভূখণ্ড রয়েছে।

মেলবার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় প্রকাশ, প্রতিদিন গড়ে ২ ঘণ্টা অফিস সময়ে আড্ডা দেওয়া হয়। এখন ভারতে কী হয় সেটা তো জানি না, তবে বিদেশফেরত অনেকেই বলেছেন, ভাল সংস্থাগুলিতে আড্ডা দেওয়ার উপায় বের করা হয়। কারণ, আড্ডা হলেও সুষ্ঠু আড্ডা। কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয় বেশি। আর মাঝে মাঝে একটু প্রসঙ্গ সরিয়ে বেফাঁস মেজাজের আড্ডা দেওয়া হয়, যাতে সব টেনশন গলে যায়।

তবে এ বারের সিসি ক্যামেরার নিচে আড্ডা দেওয়াটা ভিন্ন। একে তো মিটিং, তার উপরে অফিস ক্যামেরার তলায়, তার উপরে আবার প্রধান বক্তা ডেপুটি স্পিকার। এই আড্ডায় কী হয় ভাবতে গেলে কল্পনা শক্তির সীমা ছাড়িয়ে যায়। তবে শুনলাম, ওখানে আড্ডায় হয়েছিল তৃণমূল এবং বিজেপির সংসদ সদস্যদের মধ্যে। এ সবই যে ক্যামেরার চোখের সামনে।

তবে হ্যাঁ, ক্যামেরার নজর অনেক সময়ই আমাদের অজান্তে অনেক রহস্যকে খুলে ফেলে। জীবন তো ক্যামেরায় ধরা যায় না, তবে দিন দিন অনেকটাই ধরা যাচ্ছে বা বলা ভাল ধরানো হচ্ছে। তবে এই সিসি ক্যামেরার নিচে আড্ডা বিষয়টা এখন যে রীতিমতো আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটা ভাবলেও হাসি আসে।