আতঙ্কের লীলাখেলা: ভিড়ের মধ্যে বহু আয়োজন, আর সেই রেশ ট্র্যাজেডির পাতায়




উৎসবের আমেজে, আনন্দে মেতে ওঠার উচ্ছ্বাসে, অজান্তেই নিজেকে আমরা তুলে দিই ভিড়ের মুখে। সে ভিড় কখন মৃত্যুর হাত ধরে আসবে, সেটা হয়তো কেউই ভাবি না।

ঠিক যেমন হয়নি ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল স্টেডিয়ামে। সেখানকার ক্লাব প্রতিযোগিতার ফাইনাল ম্যাচের পর শুরু হওয়া ঠেলাঠেলি, দাপিয়ে বেরিয়ে আসে এক বিশাল দুর্যোগের রূপে। নিহত হয় অন্তত ১৭৪ জন।

ভিড়ের মধ্যে এই রকম দুঃখজনক ঘটনা নতুন কিছু নয়। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে অন্তত আটটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে ভিড়ের কারণে। শুধুমাত্র হজযাত্রীদের ভিড়েই মারা গেছেন কমপক্ষে দুই হাজার লোক।

ভিড়ের চাপ অসম্ভব ব্যাপার। শুধুমাত্র শারীরিকই নয়, মানসিকভাবেও। এমন সময় মানুষ হারায় নিয়ন্ত্রণ। অন্যকে রক্ষা করার চেয়েও নিজের প্রাণ বাঁচানো উঠে আসে আগে।

একটা সময় পরে ভিড় এতটাই ঘন হয়ে যায় যে, সেখানে নিশ্বাস নেওয়াটাই কষ্টকর হয়ে ওঠে। ভোলবদল হতে থাকে গরম এবং শীতল বাতাস। তখনই ঘটে ট্র্যাজেডি।

ভিড়ের মধ্যে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য কয়েকটি বিষয় মনে রাখলে ভালো হয়। যেমন:

  • ভিড় ভরে গেলে প্রথমেই নিজের পায়ের নিচে দৃঢ় ভিত্তি খোঁজার চেষ্টা করুন।
  • পেছনে কিংবা পাশে কেউ ঠেলা দিলে সামনে কাউকে ধরে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করুন।
  • জুতা পরে যেতে পারলে ভালো। আর যদি জুতা খুলে যায়, তাহলে সেগুলো ফেলে দিন।
  • যদি পড়ে যান, তাহলে দ্রুত উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। দাঁড়াতে না পারলে পাশে কাউকে সাহায্য চান।
  • অন্যদের সাহায্যের জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকুন।

ভিড় জমাট হতে শুরু করলেই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব নেয় পুলিশ বা কর্তৃপক্ষ। তাদের নির্দেশ মেনে চলাই ভালো। তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করলে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক সহজ হয়।

ভিড়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে একটু ভাবুন তো, আপনি কি সত্যিই সেখানে যেতে চান? অন্য কোনো নিরাপদ উপায়ে সেই আনন্দ উপভোগ করার আছে কি না?

আপনার নিরাপত্তা নিজের হাতে। তাই ভিড় এড়িয়ে চলুন, যতটা সম্ভব। আর যদি কখনো ভিড়ের মধ্যে পড়তেই হয়, তাহলে শান্ত থাকুন, ধৈর্য ধরুন এবং নিজের নিরাপত্তার খেয়াল রাখুন।