আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর অলঙ্কার ব্র্যান্ডগুলি




আপনার বাড়িতে কিছু অলংকার থাকতেই পারে। তবে, আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন যে, সেই অলংকারগুলি কোথা থেকে এসেছে? এবং তাদের পিছনে কী কী গল্প রয়েছে? এই গল্পের নায়ক একটি পরিবার, যারা তিন প্রজন্মেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় অলংকার শিল্পে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে।

আদিত্য বিড়লার বীরত্বকথা


আদিত্য বিড়লা গ্রুপ হল ভারতের শীর্ষস্থানীয় কনগ্লোমারেটগুলির মধ্যে একটি, যার সদর দফতর মুম্বাইয়ে অবস্থিত। এই গ্রুপটি বস্ত্র, সিমেন্ট, ধাতু, টেলিযোগাযোগ এবং আর্থিক সেবা সহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবসা পরিচালনা করে। তবে, এটি একটি শিল্পের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত, সেটি হল অলংকার।
আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর অলংকার ব্যবসাটি 1995 সালে শুরু হয়েছিল, যখন গ্রুপটি তানিষ্ক ব্র্যান্ডটি অধিগ্রহণ করেছিল। তানিষ্ক আজ ভারতের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে বিশ্বস্ত অলংকার খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে একটি। এর পর থেকে, আদিত্য বিড়লা গ্রুপ রিকুইশ নামে একটি প্রিমিয়াম অলংকার ব্র্যান্ড এবং অংরা নামে একটি ল্যাথনিক অলংকার বিক্রির ব্র্যান্ডও চালু করেছে।

অলংকার তৈরির শিল্প


অলংকার তৈরি করা একটি শিল্প যার ভারতীয় সংস্কৃতিতে গভীর শিকড় রয়েছে। প্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয়রা অলংকার পরে আসছে এবং এটি সৌন্দর্য, সমৃদ্ধি এবং সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীক।
আদিত্য বিড়লা গ্রুপের অলংকার ব্র্যান্ডগুলি ভারতীয় অলংকার শিল্পকে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তানিষ্ক সর্বদা প্রচলিততার শীর্ষে রয়েছে, নতুন নতুন নকশা এবং স্টাইল চালু করে। রিকুইশ অলংকারের জগতে আরও বিলাসবহুল অভিজ্ঞতা প্রদান করে, বিশেষ করে ডিজাইনার অলংকার এবং বিশেষ সংগ্রহের মাধ্যমে। অংরা শহুরে ভারতীয় নারীদের জন্য স্টাইলিশ এবং সাশ্রয়ী মূল্যের অলংকারের উৎস।

পরিবারের ব্যবসা


আদিত্য বিড়লা গ্রুপ একটি পরিবারের ব্যবসা, এবং এই গল্পে পরিবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান, কুমার মঙ্গলম বিড়লা, তিন প্রজন্মের ব্যবসায়িক নেতৃত্বের উত্তরাধিকার সঞ্চার করেন।
বিড়লা পরিবারের অলংকার শিল্পের প্রতি প্রতিশ্রুতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। কুমার মঙ্গলম বিড়লার পিতামহ, শ্রী ঘনশ্যামদাস বিড়লা, একজন বিশিষ্ট জ্যোতিষ ছিলেন, যিনি বিশ্বাস করতেন যে অলংকার মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি তানিষ্ক ব্র্যান্ডের নাম রেখেছিলেন, যা সংস্কৃত শব্দ "তনিসকা" থেকে এসেছে, যার অর্থ "স্বর্ণের মতো মূল্যবান"।

ভারতের অলংকার রাজধানী


আদিত্য বিড়লা গ্রুপের অলংকার ব্র্যান্ডগুলি ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে একটি শক্তিশালী উপস্থিতি তৈরি করেছে। তবে, গ্রুপের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলির মধ্যে একটি হল জয়পুর।
জয়পুরকে প্রায়শই "ভারতের অলংকার রাজধানী" বলা হয়। এই শহরটি তিনশো বছরেরও বেশি সময় ধরে অলংকার তৈরির কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। আদিত্য বিড়লা গ্রুপ এই শহরে একটি বড় উপস্থিতি রয়েছে, যার রয়েছে একটি কারখানা, একটি গবেষণা এবং উন্নয়ন কেন্দ্র এবং বিভিন্ন খুচরা দোকান।

সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা


আদিত্য বিড়লা গ্রুপ কেবল একটি ব্যবসায়িক সংস্থা নয়, বরং সামাজিক দায়িত্বের প্রতি গভীরভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। গ্রুপটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং গ্রামীণ উন্নয়ন খাতে বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করে।
অলংকার শিল্পেও গ্রুপটির সামাজিক দায়ের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তানিষ্ক একটি সার্বজনীন উদ্যোগ চালাচ্ছে যা "স্বর্ণের সুখ" নামে পরিচিত, যা ভারতের গ্রামীণ অঞ্চলগুলিতে মহিলাদের জন্য স্বর্ণের সঞ্চয়ের উপর জোর দেয়। এই প্রকল্পটি প্রায় ১০ লাখ মহিলাকে স্বর্ণে বিনিয়োগ করতে সহায়তা করেছে, যা তাদের আর্থিক নিরাপত্তা বাড়িয়েছে।

ভবিষ্যতের দিকে তাকাচ্ছে


আদিত্য বিড়লা গ্রুপ ভারতীয় অলংকার শিল্পে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছে। গ্রুপটি তার ব্র্যান্ডগুলিকে আরও শহরে প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছে এবং নতুন নতুন নকশা এবং প্রযুক্তিগুলির মাধ্যমে নতুনত্ব আনতে চাইছে।
গ্রুপটি সামাজিক দায়িত্বের প্রতি তার অঙ্গীকার অব্যাহত রাখবে, বিশেষ করে "স্বর্ণের সুখ" উদ্যোগের মাধ্যমে। আদিত্য বিড়লা গ্রুপ আগামী বছরগুলিতে ভারতীয় অলংকার শিল্পের নেতৃত্ব দেওয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে, নতুন উচ্চতা অর্জনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কারণ তানিষ্ক বলছে, "হীরের মতো মূল্যবান"।