আনুগত্যের বন্ধন: শিক্ষক এবং ছাত্র যাদের জীবন বিকাশ করলো




এর কিছুদিন পরেই অরুণিমা তাকে দুটি বই উপহার দিলেন। "এগুলো বিখ্যাত লেখকদের লেখা। তুমি পড়ো। তোমার নিজের উপর বিশ্বাস ফিরবে। তোমার নিজের সক্ষমতা বুঝতে পারবে।" বললেন তিনি।

  • অরুণিমা তাকে 'অ্যাটিটিউড ইজ এভরি থিং' বইটি দেন যা জেফ হ্যাডসনের লেখা।
  • দ্বিতীয় বইটি ছিল 'ওয়্যাক আপ, লিভ ইউর মার্ক' যা রবিন শর্মার লেখা।

রঞ্জনা শুধু বই দিলেন না, সাথে নিয়মিত বই পড়ার ওপর জোর দিলেন। আর তখন থেকেই রঞ্জনার জীবন বদলাতে শুরু করল। প্রথম বছরের শেষে রঞ্জনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ ছাত্রী হলেন। পরের বছরও একইভাবে শীর্ষে রইলেন।

কিন্তু শিক্ষক হিসেবে শুধুমাত্র ভালো শিক্ষাই নয়, ভালো মানুষও গড়ে তুলতে চাইতেন অরুণিমা। তিনি তার ছাত্রদের মানুষ হিসেবেও গড়ে তুলতে চেষ্টা করেন। তাই ছাত্রদের সাহায্য করার জন্য বই ছাড়াও তিনি অন্য পন্থা অবলম্বন করেন।

রঞ্জনা সেদিনের কথা মনে করতেই চোখে জল এলো।

"আমি তখন প্রথম বর্ষে। আর আমার মা সেদিন সকালে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমন কিছুই ছিল না ঘরে। সেই দিনই ক্লাসে অরুণিমা ম্যাডামের সঙ্গে দেখা হলো," গলা ধরে বলল রঞ্জনা।

"আমি ম্যাডামকে পুরো ঘটনাটা বললাম। তিনি আমাকে বাসায় নিয়ে গেলেন এবং আমাকে ১০,০০০ টাকা দিলেন। বললেন, 'এখন দরকার হবে। পরে যখন হাতে আসবে তুমি আমাকে ফেরত দিও।' এমন একটা অবস্থায় অরুণিমা ম্যাডামের এই সাহায্য আমাকে নতুন উদ্যম দিল।

শিক্ষক হিসেবে অরুণিমার এই ভূমিকা শুধুমাত্র রঞ্জনার জীবনই বদলায়নি, বহু ছাত্র-ছাত্রীর জীবন বদলেছে। দুঃখের দিনে শিক্ষকরা যখন ছাত্রদের পাশে থাকেন, তখন ছাত্ররা বুঝতে পারে যে তাদের জীবনের গুরুত্ব কী। তারা জানে, শুধুমাত্র পড়াশোনা নয়, জীবন তাদের শিক্ষার মাধ্যম হতে পারে।