আন্ধাগণ রিভিউ




এ বছর বাংলা সিনেমা দর্শকদের সান্ত্বনা দিয়েছে ‘আন্ধাগণ’-এর মতো সিনেমাগুলো। এবারে সুজয় ঘোষের নজর পড়ল রবীন্দ্রনাথের ‘চোখে লিখা’ গল্পের দিকে। লিখেছেন আরিজিৎ বিশ্বাস। প্রযোজনা করেছেন অবিক মুখোপাধ্যায় ও পরোমা নেওগি। প্রযুক্তির এই যুগে শারীরিক অক্ষমতা, প্রতিবন্ধকতাকেই প্রতিপাদ্য করে ‘আন্ধাগণ’-এর কাহিনি রচিত হয়েছে। প্রযুক্তির সাহায্যে কি অক্ষমতাকে অক্ষমতা বলে আর মনে হয়?
সিনেমার কাহিনি শুরু হয় নিউ ইয়র্কে। আরিফ (অভিষেক বচ্চন) একজন আইটি প্রফেশনাল, যিনি দৃষ্টিহীন। নিউ ইয়র্কের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। তাছাড়া আরিফের কণ্ঠস্বর এতই মিষ্টি যে গুণী গায়ক হিসেবে জনপ্রিয়তাও কম নয়। কাছে থাকা প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করেন আরিফ। তার সেরা বন্ধু সুরিয়া (চন্দন রায় সানিয়াল)। একদিন আচমকা আরিফের জীবনে আসেন রিমি বন্দ্যোপাধ্যায় (রসিকা দুগ্গল)।
দুজনে প্রথম সাক্ষাত রক্ষণাবেক্ষণ কাজে। রিমি দৃষ্টিসম্পন্ন। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে মোটেও সুখী নয়। দুজনের প্রথম সাক্ষাতের পর থেকেই দুজন দুজনের দিকে আকৃষ্ট হতে থাকেন। একদিন রিমি সিদ্ধান্ত নেন তিনি আরিফকে তার জীবনে সঙ্গী হিসেবে চান। সম্পর্কটা দিন দিন গাঢ় হতে থাকে। তখন রিমির স্বামী (অর্জুন রামপাল) জানতে পারেন রিমির আর একটা সম্পর্ক রয়েছে। অর্জুন খুবই অসহায়। দুটি পুরুষের মাঝে রিমির স্থান কোথায়, তিনি কাকে বেছে নেবেন? এই জটিল প্রশ্নের উত্তরই ‘আন্ধাগণ’।
অভিনয়ের দিক থেকে সব অভিনয়শিল্পীরা দারুণ অভিনয় করেছেন। অভিষেক চরিত্রে অভিষেক বচ্চন বেশ ভালো অভিনয় করেছেন। দৃষ্টিহীনতায় তার অভিনয় অসাধারণ। এই চরিত্র আর কেউ হয়তো এভাবে অভিনয় করতে পারতেন না। রসিকা দুগ্গলও বেশ ভালো অভিনয় করেছেন। আর চন্দন রায় সানিয়াল যেরকম অভিনয় করেছেন, তিনি খুব তাড়াতাড়ি মুখ্য চরিত্রেও অভিনয় করার ক্ষমতা রাখেন।
একটা বড় সিনেমা হলের পর্দায় অক্ষমতা কীভাবে দেখানো যায়, এ ছবির পরিচালক সুজয় ঘোষ সেই কাজটা দারুণ ভাবেই করেছেন। সিনেমার সঙ্গীতও দারুণ। সবমিশিয়ে বলা যায়, এই সপ্তাহান্তে ‘আন্ধাগণ’ দেখতে যেতে পারেন।