আন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডু




আন্ধ্রপ্রদেশের রাজনীতিতে চন্দ্রবাবু নাইডু একটি পরিচিত নাম। তিনি এই রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ। নাইডুর রাজনৈতিক জীবন দীর্ঘ এবং ঘটনাবহুল, তিনি বিভিন্ন উত্থান-পতনের সাক্ষী হয়েছেন।
প্রাথমিক জীবন এবং কর্মজীবন:
চন্দ্রবাবু নাইডু ১৯৫০ সালের ২০শে এপ্রিল আন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একটি কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামের একটি স্কুলে পেয়েছিলেন। স্কুল শেষ করার পর, তিনি কৃষি বিষয়ে একটি ডিগ্রি অর্জন করার জন্য তিরুপতির শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর কৃষি কলেজে যোগ দেন।
কলেজে থাকাকালীন, নাইডু ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তিনি রাজনীতিবিদ এনটি রামারাওয়ের নেতৃত্বে তেলুগু দেশম পার্টিতে যোগ দেন।
রাজনৈতিক কর্মজীবন:
নাইডুর রাজনৈতিক কর্মজীবন ১৯৭৮ সালে শুরু হয় যখন তিনি আন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভায় নির্বাচিত হন। তিনি দ্রুত পার্টিতে উঠে আসেন এবং তাকে বিভিন্ন রাজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৯৫ সালে, তিনি আন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে, নাইডু রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি সফটওয়্যার এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ এবং পরিকাঠামোর উন্নয়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন। তাঁর নেতৃত্বে, আন্ধ্রপ্রদেশ ভারতের অন্যতম দ্রুতবর্ধনশীল রাজ্যে পরিণত হয়।
বিরোধী দলের নেতা:
২০০৪ সালে, নাইডু রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হন এবং তিনি বিরোধী দলের নেতা হন। তিনি জোট সরকারের নীতির বিরুদ্ধে প্রচার চালান এবং রাজ্যে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল গড়ে তোলেন।
মুখ্যমন্ত্রী পদে পুনরায় নির্বাচিত:
২০১৪ সালে, নাইডু তেলেঙ্গানা থেকে আন্ধ্রপ্রদেশ পৃথক হওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁর পার্টি বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয় এবং তিনি আরেকবার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
সমসাময়িক সমস্যা:
সম্প্রতি, নাইডু তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীদের সমালোচনা এবং রাজ্যের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্কে জড়িত হয়েছেন। তিনি কেন্দ্র সরকারের নীতি সমালোচনা করতেও সময় ব্যয় করেছেন, বিশেষ করে বিশেষ মর্যাদা প্রদানের দাবি নিয়ে।
ব্যক্তিগত জীবন:
চন্দ্রবাবু নাইডু বুর্রা রমেশ্বরীকে বিয়ে করেছেন। তাদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে আছে। তাঁর মেয়ে লোকেশ, তেলুগু দেশম পার্টির একজন রাজনীতিবিদ।
উত্তরাধিকার:
চন্দ্রবাবু নাইডু আন্ধ্রপ্রদেশ রাজনীতিতে একটি কিংবদন্তী হিসেবে বিবেচিত হন। তাঁর অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতি অঙ্গীকার এবং রাজ্যের পৃথকীকরণের নেতৃত্বের জন্য তাঁকে স্মরণ করা হবে। তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার তাঁর মেয়ে লোকেশের হাতে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, যিনি তেলুগু দেশম পার্টির বর্তমান সভাপতি।