আপনি যা জানলেন না: দিল্লি বিমানবন্দর টার্মিনাল ১-এর রহস্যময় গল্প




দিল্লিতে কয়েকবার গিয়েছি। সেখানকার ব্যাটারি রিক্সা থেকে শুরু করে অটো, লাল দ্বিতল বাস, যা সবই শহরের রাস্তায় ভিড় করে চলেছে। দিল্লি বিমানবন্দর শহরের অপরিসীম বিস্তারের প্রমাণ। কিন্তু যা আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে তা হল টার্মিনাল ১, যা তার প্রাচীন সৌন্দর্য এবং গল্পের জন্য পরিচিত।
এই কালজয়ী টার্মিনালটির মূল ভবনটি ইন্দো-ইসলামিক স্থাপত্যে নির্মিত হয়েছে, যা লাল বেলেপাথরের দেওয়াল, বিস্তৃত কার্নিস এবং একটি আকর্ষণীয় গম্বুজ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। যখন আমি এখানে প্রথম পদার্পণ করি, তখন মনে হয়েছিল যেন সময় সঙ্কুচিত হয়ে গেছে এবং আমি আরেকটি যুগে পৌঁছে গেছি।
টার্মিনালের ভিতরে অবস্থিত বিভিন্ন মুরাল আকর্ষণীয় এবং বিস্ময়কর। এটি দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যের চিত্রণ করে। একটি মুরালে ভারত মাতার চিত্র রয়েছে, যিনি সিংহের উপর আরোহণ করেছেন এবং তাঁর হাতে ত্রিশূল ধরে আছেন। আরেকটি মুরালে কালিদাসের একটি মনোমুগ্ধকর দৃশ্য রয়েছে, যিনি উর্বশির সঙ্গে প্রেমে পড়েছেন। এই মুরালগুলি শুধুমাত্র শিল্পকর্ম নয়, বরং আমাদের দেশের সমৃদ্ধ অতীতের সাক্ষী।
যদিও টার্মিনাল ১ এখন অনেকটা অপ্রচলিত, তবে এটির তখনও একটি অদ্ভুত রহস্য রয়েছে। লোকেরা বলে, রাতের বেলায়, যখন বিমানবন্দর শূন্য থাকে, তখন আপনি মাঝে মাঝে পুরনো ভবনের আশেপাশে কানপাটি দেওয়া রহস্যময় শব্দ শুনতে পান। কেউ বলে যে এটি সেই স্থপতিদের আত্মা, যারা এই বিশাল স্থাপত্যের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং তৈরি করেছিলেন। অন্যরা আবার বলে যে এটি সেই ভ্রমণকারীদের আত্মা, যারা এই টার্মিনালের মধ্য দিয়ে এসেছেন এবং গেছেন, তাদের গল্প এবং স্মৃতি এখনও এখানে অ্যাম্বার হয়ে রয়েছে।
এই রহস্যগুলি যাই হোক না কেন, দিল্লি বিমানবন্দর টার্মিনাল ১ একটি মুগ্ধকর স্থান যা আমাদের দেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সংস্কৃতিকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এটি একটি স্থান যেখানে সময় থেমে থাকে এবং গল্পগুলি প্রাণ পায়। সুতরাং যদি আপনি কখনও দিল্লিতে থাকেন এবং কিছুটা ইতিহাস এবং রহস্য অন্বেষণ করতে চান, তাহলে টার্মিনাল ১-এ যান। আমি নিশ্চিত যে আপনি হতাশ হবেন না।