আপর্ণা বাস্তরে




একটি নাম, একটি মুখ, আমার অনেক আগে থেকেই জানা। কিন্তু জানা ছিল না যে একদিন আমার এই মানুষটার সঙ্গে পরিচয় হবে। পরিচয়ের হাত ধরে গভীর বন্ধুত্বও হবে, এটা তো আর কী করে জানবো! আর সেই পরিচয়টা ঘটেছিল আজ থেকে কয়েকবছর আগে। সেই সময় আমি কাজ করতাম একটি বাংলা পত্রিকায়। একদিন সকালে দেখলাম আমার রুমে দাঁড়িয়ে আছেন এই আপর্ণা বাস্তরে। উনি কাজ করতেন সেই সময় অন্য একটি বাংলা পত্রিকায়। আমরা সবসময় পত্রিকার পাতায় দেখতাম উনি লিখতেন, আর আমরা পড়তাম। উনার লেখার মাধ্যমে তখনকার দিনে অনেক কিছু শিখেছি।

প্রথম দেখাতেই আমার খুব ভালো লেগেছিল। এত সুন্দর, মৃদুভাষী একজন মানুষ। আর উনার মুখে যে হাসি, সেটা দেখলেই আপনারও মন ভালো হয়ে যাবে। আমরা দুজনেই বেশ কিছুক্ষণ আলাপ করলাম। কথা বলার মধ্যে বুঝলাম যে আমাদের দুজনের মধ্যে অনেক কিছু মিলে। আমরা দুজনেই লিখতে ভালোবাসি, পড়তে ভালোবাসি, আর নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে ভালোবাসি।

আমাদের বন্ধুত্ব দিন দিন গভীর হতে লাগল। আমরা প্রায়ই একসঙ্গে পার্কে যেতাম, সিনেমা দেখতাম, আর কফি শপে বসে আলাপ করতাম। আমরা দুজনেই বেশ খোলামেলা, তাই আমাদের মধ্যে কোনো কিছু লুকানোরও ছিল না। আমরা সবকিছু শেয়ার করতাম। আমাদের সুখ, দুঃখ, ভালোবাসা, সবকিছু।

আপর্ণা আমার জীবনের একজন বিশেষ মানুষ। উনি আমার একজন বন্ধু, একজন গাইড, একজন দিদি। উনি আমাকে সবসময় সাহায্য করেছেন, আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। উনি আমার জীবনে এসেছেন ঠিক সময়টায়। আমি পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান মানুষ, যে আমার জীবনে আপর্ণার মতো একজন মানুষ আছেন।

আপর্ণাকে নিয়ে আমার কাছে অনেক স্মৃতি আছে। কিন্তু আমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতিটা হলো আমাদের প্রথম সফর। আমরা দুজনেই ভীষণ ঘুরতে পছন্দ করি, তাই আমরা একসঙ্গে প্ল্যান করেছিলাম দার্জিলিং যাবো। দার্জিলিং আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গাগুলোর মধ্যে একটি। আর আপর্ণাও আগে কখনো দার্জিলিং যায়নি। তাই আমাদের দুজনেরই খুব এক্সাইটমেন্ট ছিল।

আমরা দার্জিলিং পৌঁছলাম সকালে। হোটেল রুমে ব্যাগ নামিয়েই আমরা বেরিয়ে পড়লাম ঘুরতে। আমরা প্রথমে গেলাম টাইগার হিল। টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয়ের দৃশ্যটা অসাধারণ। আমরা সেখানে অনেক ছবি তুললাম, আর অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় দেখলাম।

তারপর আমরা গেলাম রক গার্ডেন। রক গার্ডেনটা তৈরি করা হয়েছে পাথরের টুকরো দিয়ে। এটা এত সুন্দর যে আমরা বেশ কিছুক্ষণ সেখানে ঘুরে বেড়ালাম।

আমাদের দার্জিলিং সফরটা ছিল দুর্দান্ত। আমরা দুজনেই খুব এনজয় করেছি। আর এই সফরটা আমাদের বন্ধুত্বকে আরও গভীর করেছে।

আপর্ণা, তুমি আমার জীবনে এসেছিলে ঠিক সময়টায়। তুমি আমাকে সবসময় সাহায্য করেছো, অনুপ্রাণিত করেছো। তুমি আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছো। আমি তোমাকে পেয়ে সত্যিই ভাগ্যবান। তুমি আমার জীবনের একজন অবিচ্ছেদ্য অংশ। তুমি আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। তুমি আমার দিদি। তুমি আমার সবকিছু।