ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মহিলা সুনীতা উইলিয়ামস হলেন একজন বিখ্যাত মহাকাশচারী। তিনি টানা ১৯৫ দিন মহাকাশে অবস্থান করে একটি রেকর্ড তৈরি করেছেন। তার মহাকাশ যাত্রা নিঃসন্দেহে আমাদের ভারতের জন্য গর্বের বিষয়।
প্রাথমিক জীবনঃসুনীতা উইলিয়ামস ১৯৬৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও রাজ্যেরইউক্লিডে একটি ভারতীয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা, ডঃ ডিপক পাণ্ডিয়া, ছিলেন একজন মেডিকেল সায়েন্টিস্ট এবং তার মা, বর্ণা পাণ্ডিয়া, ছিলেন একজন রমনীয় সংগীতশিল্পী।
সুনীতা তার শৈশবকাল কাটিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের নীডহাম শহরে। তিনি ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ এবং মহাকাশচারীদের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। তিনি সবসময় তার বাবার সাথে মহাকাশ সম্পর্কে কথা বলতেন এবং মহাকাশচারীদের সাক্ষাৎকার দেখতেন।
শিক্ষা এবং ক্যারিয়ারঃসুনীতা উইলিয়ামস ১৯৮৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল একাডেমী থেকে গ্র্যাজুয়েট হন এবং পরে তিনি নৌবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি একটি হেলিকপ্টার পাইলট হিসাবে প্রশিক্ষণ নেন এবং সমুদ্র-ভিত্তিক বিমানবাহী রণতরীতে কাজ করেন।
১৯৯৮ সালে, সুনীতা উইলিয়ামস মহাকাশচারী প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০০২ সালে স্টেশন এক্সপিডিশন-১৪ মিশনের জন্য মহাকাশে যান। এই মিশনের সময়, তিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) থাকা প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা হয়ে ওঠেন।
সুনীতা উইলিয়ামস ২০০৬ সালে স্টেশন এক্সপিডিশন-১৫ মিশনের জন্য আবার মহাকাশে যান। এই মিশনের সময়, তিনি ১৯৫ দিন মহাকাশে অবস্থান করে একটি নতুন রেকর্ড তৈরি করেন। তিনি এই সময়ের বেশিরভাগ সময়টাই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ব্যয় করেন এবং বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং মহাকাশযান মেরামত সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
সুনীতা উইলিয়ামস তিনটি মহাকাশযান মিশনে অংশ নিয়েছেন এবং মোট ৩২২ দিন মহাকাশে অবস্থান করেছেন। তিনি নাসার সবচেয়ে অভিজ্ঞ মহিলা মহাকাশচারীদের একজন এবং তিনি একাধিক পুরস্কার এবং সম্মাননা পেয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল মেডেল অফ টেকনোলজি এবং উদ্ভাবন।
মহাকাশ থেকে ভারতের সৌন্দর্য্য দেখাঃসুনীতা উইলিয়ামস তার মহাকাশ মিশনের সময় পৃথিবী থেকে ভারতের সৌন্দর্য্য দেখার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন যে, মহাকাশ থেকে ভারতের ভূমিকা দেখা অত্যন্ত দারুণ একটি অভিজ্ঞতা। তিনি বলেছেন যে, তিনি মহাকাশ থেকে গঙ্গা নদী, হিমালয় পর্বতমালা এবং তাজমহল দেখেছেন।
সুনীতা উইলিয়ামস ভারতের একজন গর্বিত রাষ্ট্রদূত। তিনি তার মহাকাশ মিশনের মাধ্যমে ভারতের জন্য বিশ্ব স্তরে সুনাম এনেছেন। তিনি ভারতীয় যুবকদের মহাকাশ বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করছেন।