১৫ অগাস্ট, ২০২৪। আজ আমার প্রিয় শহর কলকাতার জন্মদিন। ৩৩৯ তম জন্মদিন পেরিয়ে আজও যেন আগের মতোই তরুণী, মুগ্ধ ও উজ্জ্বল। সকাল বেলা নিত্যনियम মতো গঙ্গার ধারে ঘুরে এসেছি।
গঙ্গার ধারে দাঁড়ালে মনে হয় যেন সময় থমকে গেছে। কোনো কালের কোনো সীমা নেই। যেন শতাব্দীর পর শতাব্দী ভেসে যাচ্ছে এই পুণ্যধারার জলে। আর সেই জলের তীরে দাঁড়িয়ে যদি কলকাতার কথা না ভাবি, তবে কি চলবে? কলকাতা আমার জন্মস্থান, আমার কর্মস্থল, আমার অস্তিত্বের শহর। এই শহরটিকে ভালো না বেসে উপায় কী? কলকাতার প্রতিটা রাস্তা, গলি, পার্ক, বাজার সবকিছুই আমার কাছে যেন পরিচিত। প্রতিটা প্রাসাদ, প্রতিটা ছাতু, প্রতিটা কুঠি সবকিছুই যেন আমার নিজের।
আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন কলকাতা এতটা বদলে যায়নি। এখন যেমন চারদিকে বিশাল বিশাল দালান, চওড়া রাস্তা, এমন ছিল না তখন। তবে শহরকে কেউ সেজেগুজে রাখেনি। শহরের প্রাণ ছিল মানুষগুলোর মধ্যে। রাস্তার ধারে বসে চায়ের দোকানে আড্ডা মারা, সন্ধ্যার পরে পার্কে ঘুরে বেড়ানো, সকালে গঙ্গার ধারে হাঁটা এসবই ছিল কলকাতার মানুষের নিত্যনियम কাজ।
আজও যখন রাস্তায় বের হই, তখন মনে হয় যেন সময় পেছনে ফিরে গেছে। এই শহর কতগুলো গল্পের সাক্ষী। এই শহরে কত কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, শিল্পী জন্ম নিয়েছেন। এই শহরেতো জন্ম নিয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন কলকাতা থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার দূরত্বে। শান্তিনিকেতনের শান্তনিরিবিড় পরিবেশ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, তাঁর আঁকা ছবি সবকিছুই মনকে আনন্দ দেয়।
কলকাতাকে যদি ভালো না বাসি তাহলে আর কী বাসব? কলকাতা শুধুমাত্র একটি শহর নয়, এটি একটি সংস্কৃতি, একটি ইতিহাস, একটি অস্তিত্ব। এই শহরের প্রতি আমার ভালোবাসা অশেষ। আমি মনে করি, প্রতিটা বাঙালিরই কলকাতার প্রতি ভালোবাসা থাকা উচিত। কারণ কলকাতা শুধুমাত্র একটি শহর নয়, এটি আমাদের সকলেরই অস্তিত্বের শহর।
জন্মদিনের শুভেচ্ছা, আমার প্রিয় কলকাতা।