আমার সমতার যাত্রা: উমর খালিদ




আমি একটি স্বাভাবিক মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হয়েছি। আমার বাবা একজন ইঞ্জিনিয়ার আর মা একজন শিক্ষক। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের জীবন ছিল অনেক সরল। তবে সবকিছু বদলে যায় যখন ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গা ঘটে।

আমরা দিল্লিতে থাকতাম। যখন দাঙ্গা শুরু হলো, আমার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। আমি টিভিতে দেখতাম কিভাবে লোকজনকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে টেনে বের করে হত্যা করা হচ্ছে। আমি দেখতাম কিভাবে মহিলাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে।

দাঙ্গা আমার উপর একটি গভীর প্রভাব ফেলেছিল। আমি দেখতে পেয়েছিলাম যে আমার দেশটি কতটা নিষ্ঠুর এবং বৈষম্যমূলক হতে পারে। আমি অনুভব করেছিলাম যে আমি যে সমাজে বাস করছিলাম সেটা ন্যায্য নয়।

দাঙ্গার পর আমি আর একই রকম ছিলাম না। আমি বিচলিত এবং রেগে ছিলাম। আমি জানতাম যে আমাকে কিছু করতে হবে।

আমি সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি একটি স্থানীয় NGO তে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ শুরু করি। আমি ঘরে ঘরে গিয়ে দাঙ্গা প্রভাবিত মানুষদের সাহায্য করতাম।

আমি দাঙ্গা প্রভাবিত মানুষদের কাছে থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমি শিখেছি যে দমন ও বৈষম্যের মুখোমুখি হওয়ার পরেও মানুষ কতটা স্থিতিস্থাপক হতে পারে। আমি শিখেছি যে সংহতি এবং সমর্থন একটি শক্তিশালী শক্তি হতে পারে।

আমি NGO তে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা চালিয়ে যেতে লাগলাম। আমি ঘরে ঘরে গিয়ে দাঙ্গা প্রভাবিত মানুষদের সাহায্য করতাম। আমি স্কুলে এবং কলেজে বক্তৃতা দিতাম। আমি সামাজিক বিচারের জন্য লড়াই করার গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করতাম।

আমি এখন একজন সামাজিক কর্মী। আমি দমন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কাজ করছি। আমি একটি ভারত গড়ার জন্য কাজ করছি যেখানে সবার জন্য সুযোগ ও ন্যায়বিচার সমান হবে।

আমার যাত্রা সহজ ছিল না। আমার হুমকি দেওয়া হয়েছে, হামলা করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আমি হাল ছেড়ে দেইনি। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের যা করার তা আমাদের করতে হবে। আমরা সামাজিক বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

আমি জানি যে সামাজিক বিচার অর্জনের লড়াই দীর্ঘ এবং কঠিন হবে। তবে আমি আশাবাদী। আমি বিশ্বাস করি যে আমরা একটি ভারত গড়তে পারি যেখানে সবার জন্য সুযোগ ও ন্যায়বিচার সমান হবে।