আরএসএসের পতন: কীভাবে একটি সাম্প্রদায়িক সংগঠন ভারতের ভবিষ্যৎকে আকার দিতে ব্যর্থ হল
যখন আরএসএস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তখনকার ভারত একটি খুব ভিন্ন দেশ ছিল।
কলকাতায় হিন্দু মহাসভার অধিবেশনে এই সংগঠনটির গোঁড়াপত্তন হয়েছিল ১৯২৫ সালে। দেশ তখন শত বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল এবং স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন তীব্র হচ্ছিল। আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতারা বিশ্বাস করতেন যে ভারত এমন একটি দেশ যা হিন্দুদের দ্বারা শাসিত হওয়া উচিত এবং তাদের লক্ষ্য ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি মজবুত জাতীয়তাবাদী भावना গড়ে তোলা।
আরএসএস শুরু থেকেই বিতর্কিত ছিল। হিন্দুদের অধিকারের জন্য লড়াই করার দাবির আড়ালে তাদের অন্ধজাতীয়তাবাদ এবং মুসলমানদের প্রতি শত্রুতা জন্য দলটির সমালোচনা করা হয়েছে। আরএসএস দেশের বিভাজন এবং ১৯৪৮ সালে মহাত্মা গান্ধীর হত্যার সাথেও জড়িত ছিল।
স্বাধীনতার পরের বছরগুলিতে আরএসএস ভারতীয় রাজনীতিতে একটি প্রান্তিক শক্তি ছিল। তবে, 1990 এর দশকে সংগঠনটি আবার উত্থান ঘটে এবং 2014 সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এটি ভারতীয় সমাজে একটি প্রধান শক্তি।
- আরএসএসের পতন কীভাবে ঘটেছে?
- সংগঠনটি ভারতের ভবিষ্যৎকে আকার দিতে ব্যর্থ হয়েছে কেন ?
এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে আরএসএসের ইতিহাস, মতাদর্শ এবং ভারতীয় সমাজে এর ভূমিকা পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
আরএসএসের মতাদর্শ হল হিন্দু জাতীয়তাবাদ, যা এই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে যে ভারত একটি হিন্দু রাষ্ট্র এবং হিন্দুরা ভারতের আসল শাসক হওয়া উচিত। এই মতাদর্শ মুসলমান, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরোধিতার ভিত্তিতে স্থাপন করা হয়েছে।
আরএসএসের কার্যকলাপ মূলত হিন্দুদের মধ্যে একটি মজবুত জাতীয়তাবাদী भावना গড়ে তোলার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। সংগঠনটি শাখা এবং শিবিরের মাধ্যমে এটি করে, যেখানে সদস্যরা শারীরিক অনুশীলন, সামরিক কৌশল এবং হিন্দুত্বের মতাদর্শ শিক্ষা দেয়।
আরএসএস ভারতীয় রাজনীতিতেও একটি প্রধান শক্তি হয়ে উঠেছে। সংগঠনটি ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মূল ভিত্তি, যা 2014 সাল থেকে দেশের শাসক দল। বিজেপির ক্ষমতায় আসার পর আরএসএসের মতাদর্শ ভারতীয় সমাজে আরও বেশি প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে।
যাইহোক, আরএসএসের পতন ঘটছে। সংগঠনটির হিন্দু জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ আর ভারতের ক্রমবর্ধমান বহুত্ববাদী সমাজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিজেপির অ-কার্যকর শাসনের কারণে জনগণ আরএসএসের প্রতি ক্রমবর্ধমানভাবে হতাশ হয়ে পড়েছে।
আরএসএসের পতন ভারতের জন্য একটি ইতিবাচক ঘটনা হবে।
সংগঠনের মতাদর্শ বিভাজনমূলক এবং বৈষম্যমূলক এবং এটি একটি আরও ন্যায্য এবং সমতার ভারতের ক্রমবর্ধমান ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আরএসএসের পতন ভারতকে একটি আরও সর্বজনীন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ হিসাবে গড়ে তোলার পথ খুলে দেবে।