আরবিন্দ কেজরিওয়াল ভারতীয় রাজনীতিতে একটি আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তিনি দুর্নীতি ও পুরনো রাজনৈতিক ব্যাবস্থার বিরুদ্ধে তার অদম্য অবস্থানের জন্য পরিচিত। তার নেতৃত্বে, আম আদমি পার্টি (এএপি) দিল্লিতে পরপর তিনবার বিধানসভা নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে এবং এটি ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও একটি প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
কেজরিওয়ালের প্রাথমিক জীবন এবং কর্মজীবন অনেকটা সাধারণ মানুষের মতোই ছিল। তিনি হরিয়ানার একটি ছোট শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ভারতীয় রাজস্ব পরিষেবায় কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। তবে, তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে সামাজিক কর্মী হিসাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই সময়ে তিনি অন্না হজারের নেতৃত্বে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন।
আন্না হজারে আন্দোলনের সময় কেজরিওয়ালের ভূমিকা তাকে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল এবং তিনি ২০১২ সালে আম আদমি পার্টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এএপি একটি বিশেষ দল হিসাবে উত্থিত হয়েছিল যা দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এটি দিল্লির ২০১৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একটি চমকপ্রদ বিজয় অর্জন করেছিল, যেখানে এটি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এবং ভারতীয় জনতা পার্টি উভয়কেই পরাজিত করেছিল।
তারপর থেকে, কেজরিওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দুর্নীতি নির্মূল, জনসেবা উন্নত এবং শহরের অবকাঠামো উন্নত করার জন্য কাজ করেছেন। তিনি তার অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনসাধারণের সরাসরি অংশগ্রহণকেও উত্সাহিত করেছেন। কিছু সমালোচক তাকে একজন জনপ্রিয়তাকামী বলে অভিযুক্ত করেন, কিন্তু তার সমর্থকরা যুক্তি দেন যে তিনি একজন নিষ্ঠাবান নেতা যিনি সাধারণ মানুষের ভাবনা প্রতিফলিত করেন।
কেজরিওয়াল বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব, কিন্তু তার জনপ্রিয়তা অস্বীকার করা যায় না। তিনি ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবর্তনের একটি প্রতীক হিসাবে দেখা হয়, এবং তার এএপি দল দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে একটি প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তিনি তার সরলতা, অদম্যতা এবং সাধারণ মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপনের ক্ষমতার জন্য পরিচিত।
কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক যাত্রা এখনও অসম্পূর্ণ, এবং এটি দেখার বিষয় যে তিনি ভারতের ভবিষ্যতকে গঠনে কতটা ভূমিকা রাখবেন। তবে, তিনি ইতিমধ্যেই ভারতীয় রাজনীতিতে একটি অসাধারণ অধ্যায় হিসাবে একটি চিহ্ন রেখেছেন।