আর কতদিন মানুষ মিথ্যা প্রতিশ্রুতি খাবে?
আমাদের জীবন কতক্ষণ? আমাদের জীবনে কতবার লোকসভা নির্বাচন হবে? আচ্ছা, আমার জীবদ্দশায় 8টি নির্বাচন শেষ হয়ে গেছে। আর গণতান্ত্রিক ভারতের প্রাক্তন রাজনীতিকদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি টেলিভিশন পর্দায় কতবার শোনা হয়েছিল তা আমি গণনা করতে পারব না। এবারেও তাই। দূরদর্শনের আলোচনা থেকে শুরু করে গভীর রাতে বিভিন্ন সংবাদপত্রের দ্বিতীয় পাতায় বিজ্ঞাপন ছাপা, পার্টির পতাকা দিয়ে গাড়ি সাজানো – সবই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে।
আমাদের অনেক তরুণ আছে যারা এবারই প্রথমবার ভোট দেবে। তাদের দেখার অনেক কিছু আছে। কীভাবে সস্তায় কল্পিত স্বপ্ন বিক্রি করা হয়, কীভাবে বড় বড় কল্পনা দেখানো হয় সেগুলো বাস্তবে কখনো রূপায়িত হয় না, এবং কীভাবে আমরা আবারও আগামী ৫ বছরের জন্য একই বিষয় দেখতে পাব। আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে এরকম একটা বার্তা যদি যায়, তাহলে সেটা খুব দুর্ভাগ্যজনক হবে।
আপনারা কি জানেন, তামিলনাড়ুর প্রতিটি পরিবারে গড়ে ৫ জন জীবনধারণ করেন। গত ১০ বছরে বেতন 12% বেড়েছে। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে, মুদ্রাস্ফীতি 50% বেড়েছে। অর্থাৎ, আমাদের বেতন বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কমেছে জীবনযাত্রার মান। কেন এমন হয়েছে? কারণ, আমরা যেসব নেতাদের নির্বাচিত করেছি, তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ভালো সুযোগ তৈরি করার, ভালো চাকরি তৈরি করার কথা, তারা কিন্তু তা করেন নি। এর পরিবর্তে, তারা তাদের নিজস্ব ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, নিজেদের দলটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
আমাদের তরুণ প্রজন্মকে জানতে হবে যে, রাজনীতি কখনোই দলের জন্য বা ব্যক্তিগত স্বার্থ পূরণের জন্য হয় না। রাজনীতি হল মানুষের জন্য, মানুষের উন্নতির জন্য। রাজনীতি হল সমাজের দলিত এবং দরিদ্র মানুষদের সাহায্য করার জন্য, তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করার জন্য। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে জানতে হবে, যদি তারা রাজনীতিতে আসতে চান, তাহলে তাদের লোকেদের সাহায্য করার জন্য এখানে আসতে হবে। তাদের জনগণের জন্য কাজ করতে হবে, দলের জন্য নয়।
আমাদের ভারতবর্ষ একটি মহান দেশ। আমাদের এত কিছু দেওয়ার আছে। কিন্তু আমরা যদি আমাদের সমস্ত সময় রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং দুর্নীতিতে ব্যয় করি, তাহলে আমরা কখনই আমাদের সামর্থ্য অর্জন করতে পারব না। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে আমাদের অনুপ্রাণিত করতে হবে। তাদের আমাদের দেখাতে হবে যে, আমরা যদি একসাথে কাজ করতে পারি, তাহলে আমরা যেকোনো কিছু অর্জন করতে পারি। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে আমাদের দেশ গঠনে সাহায্য করতে হবে। তাদের সততা এবং সাহসের সঙ্গে রাজনীতিতে নামতে হবে। তাদের দলের জন্য বা ব্যক্তিগত স্বার্থ পূরণের জন্য নয়, বরং মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। তাদের জানতে হবে রাজনীতি সকলের জন্য এবং গণতান্ত্রিক দেশ গঠনে যুবকদেরও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। যদি আমাদের তরুণ প্রজন্ম একবার একমত হয়ে সামনে আসে, তবে আমাদের দেশ হবে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ।