আর কি শুধু অমরাবতী?




আমরা যারা অন্ধ্র প্রদেশের বাসিন্দা, আমাদের মনে অমরাবতী মানেই আমাদের রাজধানী। ২০০২ সালে যখন আন্ধ্রের বিভাজন হয়ে তেলঙ্গানা তৈরি হয়েছিল, তখন হায়দরাবাদ তেলঙ্গানার রাজধানী হয়েছিল। তখন থেকেই আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম, এত বড়ো রাজ্যের একটি বিশালকায় রাজধানী গড়ে উঠবে। আমাদের স্বপ্নের নগরী হবে অমরাবতী।
তারপর শুরু হল জমি অধিগ্রহণ। বহু কৃষক স্বেচ্ছায় তাদের জমি দিয়েছিলেন। কেউ কেউ আবার তাদের জমি দিতে রাজি হননি। তখন তাদের জমি সরকার অধিগ্রহণ করে নিয়েছিল। তখন কৃষকরা রাস্তায় নেমেছিলেন, কিন্তু সরকার কোনোভাবেই পিছপা হয়নি।
অবশেষে ২০২০ সালে অমরাবতীর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কিন্তু তার কিছুদিন পরেই করোনা महामारी আসে। করোনার কারণে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এমন সময় নতুন করে আবার শুরু হল রাজধানী নিয়ে রাজনীতি। তেলুগু দেশম পার্টি বলল, তাদের আমলেই অমরাবতীর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। আর হাইকোর্টের নির্দেশে বিজেপির সরকার সেটিকে বন্ধ করে দিয়েছে।
বিজেপি আবার বলল, অমরাবতীতে ইতিমধ্যে যেসব কাজ হয়েছে, সে সবের মূল্য অনেক বেশি। অথচ সেখানে কতজন মানুষ থাকেন? তাদের দাবি, রাজ্যের ৮০% মানুষ সাতটি ছোট রাজধানী ঘুরিয়ে দেখলেই হয়ে যাবে। এই সাতটি রাজধানী হল:
  • বিশাখাপত্তনম (কর্মজীবী রাজধানী)
  • অমরাবতী (আইন রাজধানী)
  • কার্নুল (বিচারিক রাজধানী)
  • গুন্টুর (বিধানসভা রাজধানী)
  • বিজয়ওয়াড়া (প্রশাসনিক রাজধানী)
  • তিরুপতি (সাংস্কৃতিক রাজধানী)
  • কাকিনাড়া (কৃষি রাজধানী)
তারপর বিজেপি প্রধান আর অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন রেড্ডি মোহন বাবুকে নিয়ে অমরাবতীতে একটি শুটিং স্পট স্থাপনের ঘোषणা করেছিলেন। এটা করা হয় অমরাবতীর বিকাশের জন্য। কিন্তু তারপরেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সোমু বীররাজু শুটিং স্পট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এর ফলে এখন আন্ধ্রের রাজধানী সম্পর্কে অনেক বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কিছু মানুষ বলছেন, বিজেপি অমরাবতীকে রাজধানী হিসেবে বিকাশ করতে চায় না। আবার কিছু মানুষ বলছেন, বিজেপি অমরাবতীকেই রাজধানী রাখবে, কিন্তু সেখানে সব কিছু থাকবে না।
এই বিতর্ক এখনও চলছে। তবে একথা নিশ্চিত, অমরাবতী নিয়ে রাজনীতি এখন আর শেষ হবে না।
আপনার কি মনে হয়? আপনি কি অমরাবতীকে রাজধানী হিসেবে বিকাশ করার পক্ষে নাকি সাতটি ছোট রাজধানী করার পক্ষে?