ঈদ-উল-আযহার মহান উৎসবটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় এমন একটি ঘটনার কথা, যা মানব ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘটিয়েছিল। এই উৎসবটি আমাদের সেই আত্মত্যাগের স্মরণ করিয়ে দেয় যা আমাদের সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমাদের প্রত্যেকটির অঙ্গীকার ও ভালোবাসার প্রকাশ করে।
হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর জীবন ছিল সাহস, ধৈর্য ও বিশ্বাসের একটি জীবনী। তিনি এমন একজন ব্যক্তি ছিলেন যিনি তার সৃষ্টিকর্তার সম্পূর্ণ আনুগত্য স্বীকার করেছিলেন এবং এমনকি তার প্রিয়ম সন্তানকেও তাঁর নির্দেশে বলিদান দিতে প্রস্তুত ছিলেন। এই পরীক্ষা কেবল তাঁর বিশ্বাসেরই নয়, তাঁর প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা ও আনুগত্যেরও পরীক্ষা ছিল।
ঈদ-উল-আযহা প্রতিবছর সেই আত্মত্যাগের স্মরণে পালিত হয়। এটি মুসলমানদের সারা বিশ্বে জীবিত প্রাণী বলিদানের একটি উৎসব। এই বলিদানটি প্রতীকী, এটি আমাদের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাগুলি আল্লাহর ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করার সংকল্পের প্রকাশ।
এই বলিদানের মাধ্যমে আমরা স্বীকার করি যে আল্লাহর অধিকার সবকিছুর ঊর্ধ্বে। আমাদের জীবন, আমাদের পরিবার এবং আমাদের সমস্ত সম্পদই তাঁর কাছে আমানত। আমরা যখন বলিদান করি, তখন আমরা ঘোষণা করি যে আমরা তাঁর প্রতি আমাদের ভালোবাসা এবং আনুগত্যকে সবকিছুর চেয়ে বেশি মূল্য দেই।
আমাদের আত্মত্যাগ কেবল প্রতীকীই নয়, বরং এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিদিন, আমরা আমাদের ইচ্ছাকে দমন করতে, আমাদের মতভেদগুলিকে বাদ দিতে এবং আল্লাহর ইচ্ছার সাথে আমাদের জীবনকে সামঞ্জস্য করতে আহ্বান জানানো হয়। এটি একটি কঠিন কাজ হতে পারে, তবে এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে আমাদের আত্মত্যাগ আল্লাহর কাছে অদৃশ্য থাকে না।
যখন আমরা আল্লাহর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মত্যাগ করি, তখন আমরা শুধুমাত্র তাঁকে সন্তুষ্ট করি না, বরং আমাদের নিজেদেরকেও উন্নত করি। এটি আমাদের আত্মিক শক্তি তৈরি করে, আমাদের বিশ্বাস শক্তিশালী করে এবং আমাদের আল্লাহর নৈকট্যে নিয়ে আসে।