আহোই অষ্টমী ব্রত ২০২৪: শুভ সময়, তাৎপর্য এবং পালন পদ্ধতি




আহোই অষ্টমী ব্রত হলো একটি হিন্দু উৎসব যা মূলত মাতাদের দ্বারা তাদের সন্তানদের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি এবং দীর্ঘায়ু কামনা করে পালন করা হয়। এই ব্রতটি সংঘটিত হয় কার্তিক মাসের কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথিতে, যা সাধারণত অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে পড়ে। ২০২৪ সালে, আহোই অষ্টমী পালিত হবে ২৫ অক্টোবর, বুধবার।
শুভ সময়:
* আহোই অষ্টমী তিথি শুরু: ২৫ অক্টোবর, বুধবার, সকাল ৬টা ১৮ মিনিট
* আহোই অষ্টমী তিথি শেষ: ২৬ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার, সকাল ৮টা ৫৯ মিনিট
* আহোই মা পূজার মুহূর্ত: সন্ধ্যা ৫টা ৫৬ মিনিট থেকে রাত ৭টা ১০ মিনিট
তাৎপর্য:
আহোই অষ্টমী হলো আহোই মা নামক দেবীর পূজার দিন, যিনি সন্তানদের রক্ষক হিসাবে বিবেচিত হন। এই ব্রতের মূল উদ্দেশ্য হলো মাতাদের তাদের সন্তানদের সুরক্ষা এবং আশীর্বাদ কামনা করা। মনে করা হয় যে আহোই মা পূজা করা হলে, তিনি তাদের সন্তানদের সব বিপদ এবং অপঘাত থেকে রক্ষা করেন।
পালন পদ্ধতি:
আহোই অষ্টমী ব্রত নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে পালিত হয়:
* উপবাস: ব্রতকারী মহিলারা সারা দিন উপবাস করেন। তবে, কিছু স্থানে শুধুমাত্র দুধ ও ফল খাওয়ার অনুমতি রয়েছে।
* পূজা: সন্ধ্যায়, মাতারা আহোই মা মূর্তি বা ছবির সামনে পূজা করেন। পূজায় থালা, সিঁদুর, চাল এবং মিষ্টি দ্রব্য প্রদান করা হয়।
* কথা: পূজার পরে, আহোই মা কথার পাঠ করা হয়। এই কথার মধ্যে আহোই মা এবং সন্তানদের সুরক্ষার জন্য একটি কাহিনী রয়েছে।
* আরতি: পূজা ও কথা সমাপ্ত হলে, আহোই মা আরতি করা হয়।
* সন্তানদের আশীর্বাদ: পূজা ও আরতি শেষে, মাতারা তাদের সন্তানদের আশীর্বাদ করেন এবং তাদের মাথার উপর হাত রাখেন।
গল্প:
আহোই অষ্টমীর সঙ্গে যুক্ত একটি বিখ্যাত গল্প রয়েছে:
একবার, সাতটি মায়ের সাতটি ছেলে ছিল। একদিন, ছেলেরা জঙ্গলে খেলতে গেল এবং একটি কুয়োর কাছে পৌঁছল। কুয়ো থেকে জল টেনে পান করতে গিয়ে একটি সাপের কামড়ে একজন ছেলের মৃত্যু হয়। অন্যান্য ছেলেরা ভয়ে পালিয়ে গেল।
ছেলের মায়েরা তাদের সন্তানদের খুঁজে পেলেন না এবং দুঃখে অভিভূত হলেন। তারা আহোই মা কাছে প্রার্থনা করলেন এবং ব্রত রাখার প্রতিজ্ঞা করলেন। আহোই মা তাদের প্রার্থনা শুনেছিলেন এবং মৃত ছেলেটিকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন। তিনি অন্যান্য ছেলেদেরও রক্ষা করেছিলেন।
এই ঘটনার পর থেকে, মাতারা তাদের সন্তানদের সুরক্ষা কামনায় আহোই অষ্টমী ব্রত পালন করেন।
উপসংহার:
আহোই অষ্টমী ব্রত হলো মাতার প্রেম, বিশ্বাস এবং তাদের সন্তানদের প্রতি সংকল্পের প্রতীক। এই ব্রত পালন করে, মাতারা তাদের সন্তানদের জন্য আশীর্বাদ এবং রক্ষা কামনা করেন, যা তাদের জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি এবং দীর্ঘায়ু নিয়ে আসে।