আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেঈ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা, যিনি ১৯৮৯ সাল থেকে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় ও সামরিক কর্তৃত্বের দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৩৯ সালে ইরানের মাশহাদে জন্মগ্রহণকারী খামেনেঈ একজন শিয়া মুসলিম পণ্ডিত এবং বিপ্লবী।
খামেনেঈ ইরানের ইসলামী বিপ্লবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, যার আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনী ছিলেন। বিপ্লবের পর, খামেনেঈকে ইরানের প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয়েছিল, একটি পদে তিনি ১৯৮১ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৮৯ সালে, খামেনেঈকে আয়াতুল্লাহ খোমেনীর উত্তরাধিকারী হিসেবে সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচিত করা হয়।
সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে খামেনেঈর দায়িত্বগুলির মধ্যে ইরানের ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সংবিধানের রক্ষণাবেক্ষণ, সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ড এবং বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তিনি এছাড়াও ইরানের আধ্যাত্মিক নেতা এবং শিয়া মুসলিম বিশ্বের অন্যতম সর্বাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।
খামেনেঈর রাজনৈতিক দর্শন "ভেল্যায়াত-ই ফকীহ" নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি, যার অর্থ "ধর্মতত্ত্ববিদদের অভিভাবকত্ব"। এই নীতিটি বিশ্বাস করে যে শুধুমাত্র একজন মুজতাহিদ বা ইসলামী আইনে দক্ষ ধর্মতত্ত্ববিদই একটি ইসলামী রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য।
বিদেশী সম্পর্কের ক্ষেত্রে, খামেনেঈ পশ্চিমা দেশগুলি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি অবিশ্বাসী মনোভাব বজায় রেখেছেন। তিনি ইজরায়েলকে "জাল রাষ্ট্র" হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং এর ধ্বংসের ডাক দিয়েছেন।
খামেনেঈ ব্যক্তিগতভাবে বিবাহিত এবং তার তিনটি সন্তান রয়েছে। তিনি একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি, ধর্মতত্ত্ব এবং রাজনীতি বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি রয়েছে।
খামেনেঈর উত্তরাধিকার সম্পর্কে ব্যাপকভাবে জল্পনা-কল্পনা রয়েছে। তাঁর স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে বলে জানা গেছে এবং তিনি দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন। তাঁর সম্ভাব্য উত্তরাধিকারীদের মধ্যে তাঁর দ্বিতীয় পুত্র মোজতবা খামেনেঈকে সর্বাধিক সম্ভাব্য বলে মনে করা হয়।
সর্বোচ্চ নেতা হিসাবে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেঈর দীর্ঘ এবং প্রভাবশালী শাসনকাল ইরান এবং মধ্য প্রাচ্যকে আকৃতি দিয়েছে। তিনি একটি জটিল এবং বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব, এবং তাঁর উত্তরাধিকার আগামী বহু বছর ধরে ইরানের রাজনীতি ও সমাজকে প্রভাবিত করতে থাকবে।