আমাদের দেশের গৌরবের কথা হচ্ছে হকি। অনেক বছর ধরেই হকি টিম সারা বিশ্ব জুড়ে ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছে।
ব্রিটিশ আমলেই আমাদের দেশের হকি টিম বেশ কিছু সাফল্য এনে দিয়েছিল। বিশেষ করে ১৯২৮, ১৯৩২, ১৯৩৬ ও ১৯৪৮ সালে টানা চারবার অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জিতেছিল আমাদের হকি টিম। এই চারবারের জয়ের পেছনে স্ট্রাইকার দীপক বাবু তার সহজাত প্রতিভার ছাপ রেখেছিলেন।
১৯৫২ সালের অলিম্পিকে তাঁর অবর্তমানেও ভারত স্বর্ণ জেতে। ১৯৫৬ সালের মেলবোর্ন অলিম্পিকে ভারত স্বর্ণ জেতার পর পরের অলিম্পিকে রৌপ্যপদক জেতে। ১৯৬০ সালের রোম অলিম্পিকে ভারতের শ্রীনিবাস রাও নেতৃত্বাধীন টিম রৌপ্যপদক জিতে।
এশিয়ান গেমসেও ভারত লিড করে। ১৯৬৬, ১৯৭০ ও ১৯৭৪ সালে লিলা ক্রিশ্চন সহ অধিনায়ক আজম খানের অধীনে এশিয়ান গেমসের হকি টুর্নামেন্টে গোল্ড জিতেছিল।
বর্তমান সময়ের হকি দর্শকদের মনে দু’টি বিশ্বকাপের স্মৃতি অনেক দিন অমলিন থাকবে। ১৯৭৫ সালে মালয়েশিয়ায় ও ২০০৭ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত পুরুষদের হকি বিশ্বকাপের দুই ফাইনালে ভারত তার ক্রীড়া কুশলতা, দক্ষতা ও ঠিক সময়ে লক্ষ্য বোঝার ক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছিল। সম্প্রতি টোকিও অলিম্পিকে ৪১ বছর পর অলিম্পিকে পদক জেতে হকি টিম।
আন্তর্জাতিক হকি মহলে ভারতের বর্তমান অবস্থা ধীরে ধীরে ভাল হচ্ছে। বিশেষ করে অলিম্পিকের পদক জেতার পর ভারতে হকির আগ্রহ আবার ফিরেছে।
ভারতের হকির ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে আগামীদিনের খেলোয়াড়দের উপর। প্রতিভাধর খেলোয়াড়ের কোন অভাব নেই ভারতে। এই প্রতিভাগুলিকে সঠিকভাবে চর্চা করাতে পারলে ভবিষ্যতে ভারত হকিতে আবারও আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে।
সম্প্রতি ভারতের অনূর্ধ্ব-১৮ মেয়েদের হকি টিম জার্মানিতে আয়োজিত জুনিয়র হকি বিশ্বকাপ জিতেছে। এটিই প্রথমবার কোন ভারতীয় টিম হকি বিশ্বকাপ জিতেছে। এই অর্জনই আমাদের স্বপ্নের পথকে উজ্জ্বল করেছে।
যদি এই প্রতিভাধর তরুণ হকি খেলোয়াড়দের সঠিক ভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া যায়, তাদের যথাযথ অবকাঠামো সরবরাহ করা যায়, তাহলে পুরুষ ও মহিলাদের উভয় টিমকেই ভবিষ্যতে বিশ্বের শীর্ষে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
ভারতের হকি দলকে আমরা সবাই গর্বিত। তাদের অতীতের সাফল্যের করণে আমরা অনুপ্রাণিত, অতীতের সাফল্য আমাদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার দিশা নির্দেশ করে। সঠিক পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নির্ধারণের মাধ্যমে ভারত কিভাবে আবারও হকি শাসন করবে, সেই অপেক্ষাতেই আছি।
আমাদের হকি টিমকে আমরা সবাই অভিনন্দন জানাই এবং ভবিষ্যতেও তাদের সাফল্যের জন্য শুভকামনা রাখি।