ইনফোসিসের শ্রী নারায়ন মূর্তি




বর্তমান কর্পোরেট দুনিয়ায় একজন অনুপ্রেরণামূলক ব্যক্তিত্ব হলেন শ্রী নারায়ন মূর্তি, যিনি অতুলনীয় ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ভারতের সাফল্যের গল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ব্যবসায়ীদের জন্য একটি আদর্শ।
প্রারম্ভিক জীবন এবং শিক্ষা
নারায়ন মূর্তি ১৯৪৬ সালের ২০শে আগস্ট কর্ণাটকের শিরালিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠেন এবং স্থানীয় স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে তিনি ব্যাঙ্গালোর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন।
ইনফোসিসের জন্ম
স্নাতক হওয়ার পরে, মূর্তি পুনেতে প্যাটসিসিকে যোগদান করেন। ১৯৮১ সালে, তিনি ছয়জন সহকর্মীর সাথে মাত্র ১০,০০০ টাকা মূলধন নিয়ে ইনফোসিস প্রতিষ্ঠা করেন। সংস্থাটি প্রাথমিকভাবে সফ্টওয়্যার কনসাল্টিং এবং আউটসোর্সিংয়ে মনোনিবেশ করে।
ইনফোসিসের দ্রুত বৃদ্ধি
মূর্তির দূরদর্শিতা এবং কঠোর পরিশ্রমের ফলে ইনফোসিস দ্রুত একটি বিশ্বব্যাপী আইটি দানব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংস্থাটি ভারতের বিশ্বমানের সফ্টওয়্যার এবং আইটি পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে একটি হিসেবে আবির্ভূত হয়, যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
মূর্তির নেতৃত্বদানের স্তম্ভ
একজন নেতা হিসেবে মূর্তির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক ছিল তার নৈতিকতা এবং অখণ্ডতা। তিনি সবসময়ই স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতায় বিশ্বাস করতেন। তিনি কর্মচারীদের মূল্য দিতেন এবং তাদের ব্যক্তিগত এবং পেশাদারী বিকাশে বিনিয়োগ করতেন।
সামাজিক দায়িত্ব
ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি মূর্তিও একজন সক্রিয় সমাজসেবী। তিনি বিশ্বাস করতেন যে সংস্থাগুলির তাদের অংশীদারদের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিবেশগত উদ্যোগগুলির জন্য উদার অর্থদান এবং সমর্থন করেছেন।
সম্মান এবং স্বীকৃতি
তার অসাধারণ অবদানের জন্য মূর্তি বেশ কয়েকটি সম্মান এবং স্বীকৃতি পেয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে পদ্ম বিভূষণ, পদ্ম ভূষণ এবং লিজিয়ন ডি অনার। তিনি বিশ্বের অন্যতম সফল এবং সম্মানিত ব্যবসায়ী হিসেবে স্বীকৃত।
ব্যক্তিগত জীবন
ব্যক্তিগত জীবনে মূর্তি একজন নিরীহ এবং বিনম্র ব্যক্তি। তিনি সুधा মূর্তির সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, যিনি একজন পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক এবং সমাজকর্মী। এই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে।
উত্তরাধিকার
নারায়ন মূর্তি ভারতীয় কর্পোরেট জগতে একটি অমর উত্তরাধিকার রেখে গেছেন। ইনফোসিস প্রতিষ্ঠা করে তিনি শুধুমাত্র একটি সাফল্যের গল্প তৈরি করেন নি, বরং তিনি একটি শিল্পের প্রতিষ্ঠা করেন এবং লক্ষ লক্ষ মানুষকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেন। তিনি নৈতিকতা, অখণ্ডতা এবং সামাজিক দায়িত্বের স্তম্ভের প্রতীক, যা আজও ব্যবসায়ীদের অনুপ্রাণিত করতে থাকে।