ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ




-
মধ্যপ্রাচ্যের দুটি বড় শক্তি ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজমান। দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার। এই ঘটনাগুলোকেই ইতিহাসে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে প্রথম বড় সংঘর্ষটি ঘটেছিল ১৯৮২ সালে, যখন ইসরায়েল লেবাননে আগ্রাসন চালিয়েছিল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল দখল করে নেয় এবং সেখানে ইসরায়েল समर्थक একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করে। ইরান এই আগ্রাসনকে তীব্রভাবে নিন্দা করে এবং হেজবুল্লাহ সহ লেবানিজ প্রতিরোধ আন্দোলনকে সমর্থন দেয়।
১৯৮৫ সালে ইসরায়েল ইরানের ওপর বিমান হামলা চালায় এবং ইরানি নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ধ্বংস করে। এর প্রতিশোধ নিতে ইরান ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি সামুদ্রিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
১৯৯১ সালের ফার্স উপসাগরীয় যুদ্ধে ইরান ও ইসরায়েল দুই দেশই জোট নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছিল। তবে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত ছিল।
২০০৬ সালে ইসরায়েল আবার লেবাননে আগ্রাসন চালায়। এই আগ্রাসনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হেজবুল্লাহর কাছ থেকে দক্ষিণ লেবানন দখল করে নেয়। ইরান হেজবুল্লাহকে সমর্থন দেয় এবং সংঘর্ষে ইসরায়েলকে পরাজিত করার জন্য প্রচার চালায়।
২০০৭ সালে ইসরায়েল সিরিয়ার একটি পরমাণু চুল্লিতে বোমা হামলা চালায়। ইরান এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে এবং হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেয়।
২০১২ সালে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন যে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ না করলে ইসরায়েল সামরিক পদক্ষেপ নেবে। ইরান এই হুমকিকে অগ্রাহ্য করে এবং তার পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রাখে।
২০১৫ সালে ইরান ও ছয়টি বিশ্বশক্তির মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির অধীনে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়। বিনিময়ে ছয় বিশ্বশক্তি ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করে নিতে সম্মত হয়।
যদিও ২০১৫ সালের চুক্তি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা কিছুটা কমিয়েছে, তবে দুই দেশের মধ্যে শত্রুতা বজায় রয়েছে। ইরান আজও ইসরায়েলের অস্তিত্বকে স্বীকার করে না। ইসরায়েলও ইরানকে একটি সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র হিসেবে দেখে।
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ একটি জটিল এবং বিতর্কিত বিষয়। এই যুদ্ধের কারণ এবং পরিণতি বোঝার জন্য ইতিহাস এবং বর্তমান ঘটনাবলির গভীর জ্ঞান প্রয়োজন।