ইরান বনাম ইজরায়েল: দুটি জাতির মধ্যে দ্বন্দ্বের ইতিহাস




ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে দ্বন্দ্ব একটি দীর্ঘস্থায়ী এবং জটিল ইতিহাস রয়েছে, যা দুটি দেশের মধ্যে ভৌগোলিক নৈকট্য এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পার্থক্য থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এই দ্বন্দ্বটি মধ্যপ্রাচ্যে বর্ষীয়ান সঙ্ঘাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে দেখা হয়।

সম্পর্কের প্রাথমিক ইতিহাস

ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে সম্পর্কের ইতিহাস ১৯৪৮ সালে ইজরায়েল রাষ্ট্রের জন্মের সাথে শুরু হয়েছিল। ইজরায়েলকে একটি অবৈধ রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করে ইরান, এর স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছিল। এই অস্বীকৃতি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপদান হয়ে দাঁড়ায় যা দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্বের বীজ বপন করে।

ইরানি বিপ্লব এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্রের উত্থান

১৯৭৯ সালের ইরানী বিপ্লব এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্রের উত্থান, ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে দ্বন্দ্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়। ইরানের নতুন ইসলামি শাসন, ইজরায়েলকে মুসলিম বিশ্বের শত্রু হিসেবে দেখে।

প্রক্সি যুদ্ধ এবং হিজবুল্লাহের উত্থান

ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষের পাশাপাশি, দুই দেশ প্রক্সি যুদ্ধেও জড়িয়েছে। ইরান হিজবুল্লাহ নামে একটি সন্ত্রাসী সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, যা ইজরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়েছে। এই প্রক্সি যুদ্ধটি মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

সিরিয়ান গৃহযুদ্ধ এবং আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ, ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে একটি নতুন মাত্রা দিয়েছে। ইরান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সমর্থন করেছে, যখন ইজরায়েল সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিকে সমর্থন করেছে। এই আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

প্রযুক্তিগত উন্নতি এবং পারমাণবিক অস্ত্রের উদ্বেগ

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচি সম্পর্কে উদ্বেগ, ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে দ্বন্দ্বকে আরও জটিল করেছে। ইজরায়েল এই কর্মসূচিটিকে একটি আস্তিত্বিক হুমকি হিসেবে দেখে, যখন ইরান এটিকে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের দাবি করে।

ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে দ্বন্দ্বের ভবিষ্যৎ

ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে দ্বন্দ্বের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। দুই দেশের মধ্যে মূল অসঙ্গতির অভাবের ফলে এই দ্বন্দ্বের একটি সহজ সমাধান পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তবে, আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং বহুপাক্ষিক কূটনীতির জন্য একটি সুযোগ রয়েছে যা উত্তেজনা কমানোর এবং একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ প্রশস্ত করতে পারে।