বসন্তের মধুর গন্ধ আর প্রকৃতির জাগরণের সঙ্গে আসে আমাদের প্রিয় উগাদি। কন্নড় এবং তেলেগু নববর্ষ হিসেবে উদযাপিত এই উৎসব তিল-গুড় খাওয়ার সঙ্গে দিনটি স্বাগত করা হয়।
প্রায় দুই হাজার বছরের পুরনো এই উৎসবের ঐতিহ্য এখনো জীবন্ত। কিংবদন্তি অনুযায়ী, এই দিনই লর্ড ব্রহ্মা সৃষ্টি শুরু করেছিলেন। তাই এই দিনটিকে সৃষ্টির প্রথম দিন হিসেবে উদযাপন করা হয়।
উগাদির অন্যতম আকর্ষণ হল রঙের ছড়াছড়ি। ঘরবাড়ি রঙ্গিন রঙ্গোলিতে সাজানো হয়, মহিলারা রঙ্গিন পোশাক পরেন এবং পুরুষরা হলুদ পাগড়ি পরেন। এই রঙের সমারোহ দিনটিকে আরো উজ্জ্বল করে তোলে।
উগাদি উপলক্ষে কিছু বিশেষ খাবার তৈরি করা হয়। তিলের লাড্ডু, হুলিগি (সেমাই মিষ্টি), বেভি বেলা (সবুজ মরিচের পিঠা) এবং উগাদি পানগা (এক ধরনের আচার) এই দিনের অপরিহার্য অঙ্গ। প্রতিটি খাবারের নিজস্ব তাৎপর্য রয়েছে, যা নতুন বছরের জন্য আশীর্বাদ এবং সমৃদ্ধির প্রতীক।
কর্ণাটক এবং তেলেঙ্গানার বিভিন্ন শহরে উগাদি মহাসমারোহের আয়োজন করা হয়। রাজধানী শহরগুলোতে রাজকীয় মিছিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সঙ্গীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এই সকল অনুষ্ঠান শহরের রঙ এবং উৎসাহকে আরো বাড়িয়ে তোলে।
উগাদি কেবল একটি উৎসব নয়, এটি একটি নতুন শুরুও। এই দিনটি লোকেরা নতুন পোশাক পরে, ঘরবাড়ি পরিষ্কার করে এবং নতুন লক্ষ্য এবং সংকল্পের সঙ্গে দিনটি স্বাগত করে। এটি একটি অনুস্মারক যে প্রতিটি নতুন বছর আমাদের জীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়।
উগাদি সম্প্রদায়ের সঙ্গে বন্ধন গড়ার একটি দিন। লোকেরা পরিবার, বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে দিনটি উদযাপন করে। এই উৎসবে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সকলে একসঙ্গে আনন্দ করে।
উগাদির মন্ত্র "যুগাদি"। এই মন্ত্রের অর্থ হল "নতুন যুগের শুরু"। এটি শুধুমাত্র একটি নতুন বছরের সূচনা নয়, এটি সমৃদ্ধি এবং সুখের একটি অভিব্যক্তিও। লোকেরা বিশ্বাস করে যে এই দিনে শুরু করা কোনো কাজই অসম্পূর্ণ থাকে না।
উগাদি আমাদের জীবনে আনন্দের একটি রঙিন রেখা টেনে তোলে। এটি আমাদের নতুন সূচনা এবং নতুন সম্ভাবনাগুলোর প্রতি আশাবাদী করার একটি দিন। তাই আসুন আমরা এই উৎসবের রঙ এবং আনন্দে নিজেদের মেতে উঠি এবং আশা করি নতুন বছরটি আমাদের জন্য শুভ এবং সমৃদ্ধিদায়ক হবে।