উফ! অ্যালার্জির জ্বালায় আর কত?




আমি জানি, তোমারও হয়তো এখানে এসেছো এই আশায় যে, এমন কিছু উপায় আছে যেগুলোর অনুসরণ করে তুমি তোমার বিরক্তিকর অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে পারবে। দুঃখিত, আমার কাছে তোমার জন্য কোনো ম্যাজিক বুলেট নেই। কিন্তু, এমন কিছু কৌশল রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করলে তোমার অ্যালার্জির লক্ষণগুলোকে কিছুটা হলেও কম করা সম্ভব।

আমার নিজেরও অ্যালার্জি আছে, তাই আমি অ্যালার্জির যন্ত্রণা কেমন হয় তা ভালোভাবেই বুঝি। আমার চোয়ালে এতোটা চুলকানি হয় যে, মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আমি আমার নিজের মুখই খেয়ে ফেলবো। আর আমার নাক থেকে সবসময় পানি গড়িয়ে পড়ে, যেনো আমাকে কেউ ঝরনার নিচে দাঁড় করিয়ে রেখেছে।

তো, আমি কি করেছি? উপায় খুঁজেছি। এবং এখন, আমার অ্যালার্জি অনেক কম। আর আমার বিশ্বাস, তুমিও পারবে।

এলার্জির কারণ কি?


অ্যালার্জি হল এমন একটি অবস্থা যেখানে তোমার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এমন কিছুর প্রতি অত্যধিক প্রতিক্রিয়া দেখায় যা আসলে ক্ষতিকারক নয়। এই ক্ষতিকারক নয় এমন জিনিসগুলোকে "অ্যালার্জেন" বলা হয়। যখন তোমার অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসে, তখন তোমার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিস্টামিন নামক একটি রাসায়নিক নিঃসরণ করে। এই হিস্টামিনই তোমার অ্যালার্জির লক্ষণগুলোর কারণ।

অ্যালার্জির অনেক ধরন আছে, যার মধ্যে কিছু সবচেয়ে সাধারণ ধরন হল:

  • পরিবেশগত অ্যালার্জি: এগুলো গাছপালা, ঘাস এবং ধূলোর মতো জিনিসগুলোর কারণে হয়।
  • খাদ্য অ্যালার্জি: এগুলো কিছু নির্দিষ্ট খাবার খাওয়ার কারণে হয়, যেমন দুধ, ডিম, শস্য এবং বাদাম।
  • কীটপতঙ্গের কামড়: এগুলো মশা, মৌমাছি এবং পিঁপড়া কামড়ানোর ফলে হয়।
  • ঔষধের অ্যালার্জি: এগুলো পেনিসিলিন এবং আইবুপ্রোফেনের মতো কিছু ঔষধ খাওয়ার কারণে হয়।

অ্যালার্জির লক্ষণ কি?


অ্যালার্জির লক্ষণের মধ্যে রয়েছে:

  • চোখে চুলকানি, জল পড়া এবং লাল হওয়া
  • নাক দিয়ে পানি গড়ানো, চুলকানি এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া
  • গলায় চুলকানি এবং খসখসে হওয়া
  • কানে চুলকানি এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া
  • চামড়ায় ফুসকুড়ি, চুলকানি এবং লাল হওয়া
  • শ্বাসকষ্ট
  • হাঁচি
  • হঠাৎ করেই শরীরে দুর্বলতা

অ্যালার্জি কিভাবে নির্ণয় করা হয়?


তোমার অ্যালার্জিকে নির্ণয় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তুমি এগুলোকে এড়িয়ে চলতে পারো এবং তোমার অ্যালার্জির লক্ষণগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারো। অ্যালার্জি নির্ণয় করার জন্য তোমার ডাক্তার তোমার চিকিৎসাগত ইতিহাস জিজ্ঞাসা করবেন এবং তোমাকে শারীরিক পরীক্ষা করবেন।

তোমার অ্যালার্জির কারণ সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য তোমার ডাক্তার একটি অ্যালার্জি ত্বকের পরীক্ষা করতে পারেন। এই পরীক্ষায় তোমার চামড়ার নীচে বিভিন্ন সম্ভাব্য অ্যালার্জেনের সামান্য পরিমাণ ইনজেকশন দেওয়া হয়। যদি তোমার কোনো অ্যালার্জেনের প্রতি অ্যালার্জি থাকে, তবে সেই স্থানে ফুসকুড়ি হবে।

তোমার ডাক্তার একটি রক্ত ​​পরীক্ষাও করতে পারেন, যাকে রেডিওঅ্যালার্জোসর্বেন্ট পরীক্ষা (RAST) বলা হয়। এই পরীক্ষায় তোমার রক্তে অ্যালার্জেনের প্রতি অ্যান্টিবডি খুঁজে দেখা হয়।

অ্যালার্জির চিকিৎসা কি?


অ্যালার্জির চিকিৎসা এড়ানো, ঔষধ এবং ইমিউনোথেরাপির উপর নির্ভর করে।

এড়ানো


তোমার অ্যালার্জির লক্ষণগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার সবচেয়ে ভাল উপায় হল অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলা। যদি তুমি জানো যে তোমার কোন জিনিসে অ্যালার্জি আছে, তবে সেগুলো এড়িয়ে চলাই হল সবচেয়ে ভালো উপায়।

ঔষধ


অ্যালার্জির লক্ষণগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তোমার ডাক্তার বিভিন্ন ধরনের ঔষধ দিতে পারেন, যেমন:

  • অ্যান্টিহিস্টামাইন চুলকানি, জল পড়া এবং লাল হওয়ার মতো লক্ষণগুলোকে কমাতে সাহায্য করে।
  • নাকের স্প্রে নাক দিয়ে পানি গড়ানো, চুলকানো এবং বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণগুলোকে কমাতে সাহায্য করে।
  • মাস্ট সেল স্টেবিলাইজার হিস্টামিন নিঃসরণকে প্রতিরোধ করে লক্ষণগুলোকে কমাতে সাহায্য করে।
  • লিউকোট্রিয়েন বিরোধী শ্বাসকষ্ট এবং হাঁচির মতো লক্ষণগুলোকে কমাতে সাহায্য করে।
  •