এই নিপাহ ভাইরাস সবাইকে কাঁপাতে পারে




একটি শুকরের প্রতি ভালোবাসা থেকেই জন্ম নিয়েছিল বিশ্বময় কাঁপন জাগানো ভয়ঙ্কর নিপাহ ভাইরাসটি!
নিপাহ ভাইরাস কী, কীভাবে হয়, উপসর্গ কীভাবে বোঝা যাবে, জানুন সব কিছু।
একটি সাধারণ উটের থেকেই নিপাহ ভাইরাসটির জন্ম। আমাদের দেশের কেরালা রাজ্যে এই ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করেছিল ২০১৮ সালে। কেরালায় একটি শুকর পালক পরিবারের বাড়ির শুকরে এই ভাইরাসের আক্রমণ দেখা যায়। সেই বাড়ির ১৭ জনের মৃত্যু হয়। আনুমানিক ৫ জনের মৃত্যু আরও হয়েছিল পরে, যারা সেই পরিবারটির সংস্পর্শে এসেছিলেন। তখন থেকেই নিপাহ ভাইরাস ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
কিভাবে নিপাহ ভাইরাস হয়?
ফলের বাদুরের সরাসরি কামড় বা তাদের মলমূত্র এবং তাদের থেকে সংক্রমিত শুকরের লালা, মল, প্রস্রাব বা অন্য কোনো শরীরের তরলের সংস্পর্শ থেকে এই ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে।
ফলের বাদুরের লালায় এই ভাইরাসটি খুব বেশি পরিমাণে থাকে। ফলের বাদুরের কামড়ের ঘা থেকে মানুষের রক্তের সংস্পর্শ এলেও এই সংক্রমণ হতে পারে। সংক্রমিত ব্যক্তির লালা, প্রস্রাব বা ঘামের সংস্পর্শে এলে এই ভাইরাস সহজেই ছড়িয়ে পড়ে।
নিপাহ ভাইরাস-এর উপসর্গ কী কী?
নিপাহ ভাইরাসের উপসর্গগুলি হঠাৎ করেই দেখা দিতে পারে। উপসর্গগুলি হল-
  • মস্তিষ্কের জ্বালা।
  • বমি ভাব এবং বমি।
  • মাথা ব্যথা।
  • সর্দি ও কাশি।
  • গলা ব্যথা।
  • হঠাৎ জ্বর।
  • মাংসপেশিতে ব্যথা।
  • মুখের চামড়ায় ফুসকুড়ি।
  • স্বাভাবিক চেতনার পরিবর্তন।
  • ঝিমুনি।
  • মাথা ঘোরা।
  • কনজাংটিভাইটিস এবং দ্বিদৃষ্টি।
নিপাহ ভাইরাস-এর উপসর্গগুলি বিভিন্ন ভাবে দেখা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে হালকা উপসর্গ থাকে, আবার কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক উপসর্গও দেখা যেতে পারে।
নিপাহ ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায়
ফলের বাদুরের সংস্পর্শে এলেও নিপাহ ভাইরাস হতে পারে। তাই খেজুর, আমের মতো ফল গাছের নীচে না সোওয়া ভালো। আর যদি সোওয়াটই হয় তাহলে মশারি টানিয়ে সোবেন।
বাদুরের মলমূত্রের সংস্পর্শে না আসার চেষ্টা করা উচিত। ফলের বাদুর এবং সংক্রমিত শুকর ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়।
সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে হাত ধোওয়া উচিত।
যদি কারো নিপাহ ভাইরাসের উপসর্গ দেখা যায় তাহলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
নিপাহ ভাইরাসের কোনো টিকা নেই। তবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকরা রোগীর উপসর্গগুলির উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা দেন। এই ভাইরাসের চিকিৎসায় অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ এবং সাপোর্টিভ কেয়ার দেওয়া হয়।
নিপাহ ভাইরাস নিয়ে সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন!