একটি অনুজ ঠাকুর




বছর ছিল ১৯৬৫। পশ্চিমবঙ্গের একটি ছোট্ট শহরে জন্মেছিল একটি ছেলে। তার নাম ছিল অনুজ। তার শৈশব কেটেছিল সহজতা ও আনন্দের মধ্যে। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে, মাত্র ১৬ বছর বয়সে তার জীবনে ঘটে যায় এক বিরাট বিপর্যয়। তার বাবা হারিয়েছিলেন চাকরি। পরিবারটির উপর দিয়ে এল আর্থিক সংকটের আঁধার।

অনুজ তখন সদ্য উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু পরিবারের অবস্থা তাকে বাধ্য করে পড়াশোনা ছেড়ে কাজ খুঁজতে। একটি ছোট দোকানে সেলসম্যানের কাজে যোগ দেয় সে। কিন্তু তার মন ছিল পড়াশোনায়।

কাজের পাশাপাশি সে কষ্ট করে রাতে পড়তে শুরু করে। বন্ধুদের সাহায্য, শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা তার ভেতরে জ্বালিয়ে দেয় জ্ঞানের আলো। কঠোর পরিশ্রম ও অদম্য ইচ্ছার জোরে সে পাস করে উচ্চ বিদ্যালয় এবং কলেজের প্রবেশিকা পরীক্ষা।

স্বপ্নের পথে

কলেজে ভর্তি হওয়ার পরও তার লড়াই শেষ হয়নি। অর্থের সংকট তাকে ঘিরে ধরেছিল। কিন্তু সে হার মানেনি। টিউশনি করে, ছাত্রবৃত্তি নিয়ে, পাশাপাশি ছোটখাটো কাজ করে সে চালিয়ে গেছে তার পড়াশোনা।

অবশেষে, স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে সে প্রথম শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছে একটি স্কুলে। শুরু হয়েছে তার নতুন জীবন। শিক্ষক হিসেবে তার প্রথম দিনটিই ছিল তার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিনগুলোর একটি।

জীবন মন্ত্র

শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি অনুজ ঝুঁকে পড়ে সামাজিক কাজে। গরিব ও অসহায় মানুষদের জন্য সে সর্বদা এগিয়ে আসে। তার মতোই সংগ্রামী মানুষদের জীবনে আশার আলো এনে দেয় সে।

অনুজের জীবন মন্ত্র হলো, "কখনো হাল ছাড়ো না।" তার জীবনীই এই কথাটির সজীব প্রমাণ। দারিদ্র্যতা ও অসুবিধাকে সে হারিয়ে দিয়েছে নিজের অদম্য ইচ্ছা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের জোরে। সেই সঙ্গে প্রমাণ করেছে যে, স্বপ্ন যদি সত্যিকারের হয়, তাহলে তাকে পূরণ করা যায় যেকোনো অবস্থায়।


  • তার জীবনের অভিজ্ঞতা আমাদের শেখায় যে, দারিদ্র বা অসুবিধা কখনই সফলতার পথে বাধা হতে পারে না।
  • স্বপ্নের পেছনে ছুটতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় এবং কখনো হাল ছাড়া যায় না।
  • অন্যদের সাহায্য করা এবং সমাজকে উন্নত করার জন্য কাজ করা আমাদের জীবনকে আরও অর্থবহ করে তোলে।

আমাদের আশপাশে অনেক অনুজ রয়েছে, যারা অসাধারণ জীবন যাপন করছে। তারা আমাদের অনুপ্রাণিত করে, আমাদের মধ্যে আশা জাগায়, এবং আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সবচেয়ে বড় বাধাগুলোকেও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব, যদি আমাদের স্বপ্নের প্রতি অটুট বিশ্বাস থাকে।