সম্প্রতি কেন্দ্র সরকার এক জাতি, এক নির্বাচন প্রকল্প প্রস্তাব করেছে। কিন্তু, এই প্রস্তাবনার মাধ্যমেই বা অন্য কোনও উপায়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আসলে কতটা পরিবর্তন আসবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। একদিকে যেমন বলা হচ্ছে যে এর মাধ্যমে অনেক পয়সা এবং সময় দুটোই বাঁচবে, তেমনই সমালোচনাও হচ্ছে যে এর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হতে পারে।
আসলে এক জাতি, এক নির্বাচন বলতে সাধারণত বোঝায়, একটি দেশে সমস্ত নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠিত করা। বর্তমানে ভারতে লোক সভা, রাজ্য বিধানসভা এবং পৌর নিগম নির্বাচনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সরকার মনে করছে যে, এক জাতি, এক নির্বাচন প্রকল্পের মাধ্যমে সমস্ত নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠিত করলে অনেক পয়সা এবং সময় দুটোই বাঁচবে।
সরকারের মতে, এক জাতি, এক নির্বাচন প্রকল্প চালু হলে প্রতি পাঁচ বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বাঁচানো সম্ভব। কিন্তু আবার সমালোচকরা মনে করছেন যে, এই প্রকল্প চালু করলে গরিব এবং দুর্বল স্তরের মানুষদের ভোট দেওয়ার সুযোগ কমে যাবে। কারণ একই দিনে বিভিন্ন নির্বাচন হওয়ায় তাদের কাছে সেই সব জায়গায় গিয়ে ভোট দেওয়া অনেক কঠিন হয়ে যাবে।
এছাড়াও, সমালোচকরা আরও মনে করছেন যে, এক জাতি, এক নির্বাচন প্রকল্পের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলির ভোটের ঘোষণাপত্রে কোনও পার্থক্য থাকবে না। সবাই একই ঘোষণাপত্র নিয়ে নির্বাচন করবে। এর ফলে, দুর্নীতি বাড়বে। আরো বেশি করে কালো টাকা নির্বাচনী ব্যয়ভারে ব্যবহার করা হবে।
এক জাতি, এক নির্বাচন প্রকল্পের পক্ষে এবং বিপক্ষে এ রকমই অনেক যুক্তি রয়েছে। এটা সরকারের উপরে নির্ভর করবে যে তারা এই প্রকল্পে গ্রহণ করে কি না এবং করলে কিভাবে এই প্রকল্পটি চালু করা হবে।
অবশেষে, এক জাতি, এক নির্বাচন প্রকল্পে সরকার এগোবে কি না তা সময়ই বলবে। তবে, এই প্রকল্পটি যদি চালু হয়, তবে ভারতের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন আসবে, সেটুকু নিশ্চিত।