এশ্বরাপ্পার অবতারণা




রাজশাসন থেকে ধর্মনিরপেক্ষতার পথে
তার জীবনী একটি শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বের অসাধারণ গল্প বলে, যিনি রাজশাসন থেকে ধর্মনিরপেক্ষতার পথে অবিচলিতভাবে হেঁটেছেন। একজন ক্ষুদ্র কৃষক পুত্র তিনি কর্ণাটকের রাজনৈতিক আকাশের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রে উত্থাপিত হয়েছিলেন, যার শাসন বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং বিতর্ক দ্বারা চিহ্নিত হয়েছিল।
প্রারম্ভিক জীবন এবং রাজনৈতিক যাত্রা

১৯৪৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কর্ণাটকের শিবমোগ্গা জেলার হরপনা হলিতে জন্মগ্রহণকারী বি এস য়েদ্যুরাপ্পা একজন ক্ষুদ্র কৃষকের পুত্র। তিনি তাঁর শৈশব গ্রামীণ কর্ণাটকের একটি সাধারণ পরিবেশে কাটিয়েছেন। তিনি একটি কঠোর শৃঙ্খলাবদ্ধ ও ধার্মিক পরিবারে বেড়ে ওঠেন।

একজন তরুণ হিসাবে, য়েদ্যুরাপ্পা স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে জন সংঘে যোগ দেন, যা পরে ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) রূপান্তরিত হয়। তিনি দ্রুত রাজনৈতিক সিঁড়ি বেয়ে ওঠেন এবং ১৯৮৩ সালে কর্ণাটক বিধানসভায় নির্বাচিত হন।

মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মেয়াদ

২০০৮ সালে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার সাথে সাথে য়েদ্যুরাপ্পার রাজনৈতিক যাত্রায় একটি মূলতান্ত্রিক মোড় আসে। তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বকাল বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি এবং বিতর্ক দ্বারা চিহ্নিত হয়েছিল।

উন্নয়নমূলক অবদান
  • রাজ্য রাইতা ভাগ্য প্রকল্প: য়েদ্যুরাপ্পা কর্ণাটকের কৃষকদের সহায়তার জন্য এই ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পটি শুরু করেছিলেন।
  • ভগীরথি প্রকল্প: তিনি দুর্ভিক্ষ-প্রবণ উত্তর কর্ণাটক অঞ্চলে পানি সরবরাহের জন্য এই বিশাল পানি নিরাপত্তা প্রকল্পটি চালু করেছিলেন।
বিতর্ক

তবে, য়েদ্যুরাপ্পার মুখ্যমন্ত্রিত্বকাল বিতর্ক দ্বারাও আচ্ছন্ন ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে খনি অনুমোদন, জমি অধিগ্রহণ এবং অন্য অনেক দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছিল।

ধর্মনিরপেক্ষতার পথে

২০১১ সালে দুর্নীতির অভিযোগে য়েদ্যুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি রাজনীতি থেকে আনুষ্ঠানিক অবসর নেননি। তিনি বিজেপিতে তার প্রভাব বজায় রেখেছেন এবং ছায়া মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ব্যাপকভাবে বিবেচিত হন।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, য়েদ্যুরাপ্পা বিজেপির উদারপন্থী মুখ হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি হিন্দুত্বের একটি মডারেট সংস্করণকে সমর্থন করেছেন এবং মুসলমান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাথে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন।

মানবিক দিক

রাজনীতির বাইরে, য়েদ্যুরাপ্পা একজন আবেগপ্রবণ ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত। তিনি পরিবারের জন্য তাঁর প্রেম এবং সহানুভূতির জন্য পরিচিত। তিনি একজন উত্সাহী কৃষক এবং তিনি তাঁর গ্রামীণ শিকড়ের সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত।

উত্তরাধিকার

বর্তমানে, য়েদ্যুরাপ্পা কর্ণাটকের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বিজেপির রাজ্য শাখার স্থির স্তম্ভ এবং রাজনৈতিক চিন্তার একটি প্রভাবশালী ফোর্স।

তার উত্তরাধিকার একটি মিশ্র ব্যাগ। তিনি উন্নয়ন ও দুর্নীতির প্রতীক, উদারতা ও ধর্মীয়তার প্রতীকও। কিন্তু তার জীবনী একটি অসাধারণ গল্প বলে, যা প্রদর্শন করে যে রাজনৈতিক যাত্রা কীভাবে একজনকে পরিবর্তন করতে পারে এবং কীভাবে একজন ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে রূপান্তরিত করতে পারেন।