শীতের অলস বিকেল । সূর্য ডুবে যাওয়া সত্ত্বেও কোনো ঠান্ডা নেই । আকাশটাও মেঘলা । আমি আমার ছাদে দাঁড়িয়ে আছি । হঠাৎ আমার চোখে পড়লো পাশের տারেসের ছাদে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটা কাঙ্গভা । সেটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে । আমারও তার দিকে তাকিয়ে রইলাম । হঠাৎ করেই সেটা আমার দিকে আসতে শুরু করল । আমি একটু ভয় পেলাম । কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আমি দেখলাম যে সেটা খুব বিপদগ্রস্ত একটা অবস্থায় আছে । তার ডানায় কী যেন আটকে গিয়েছে । তাই সেটা উড়তে পারছে না ।
আমি দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে গেলাম । তারপর আমি সেই টারেসের গেট খুলে ভিতরে ঢুকলাম । কাঙ্গভাটা এবার আমারও আরও কাছে এলো । আমি দেখলাম তার ডানার মধ্যে একটা লম্বা ঘাস আটকে আছে । আমি সেটা ধীরে ধীরে বের করে দিলাম । কাঙ্গভাটা খুব স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল । তারপর সেটা আমার দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি শব্দ করল । আমার মনে হলো সেটা আমাকে ধন্যবাদ দিচ্ছে ।
তারপর সেটা আবার উড়ে গেল । আমিও ছাদে উঠে দেখলাম সেটা আমার দিকে তাকিয়ে আবারও সেই মিষ্টি শব্দটা করছে । আমিও তাকে হাত নাড়লাম । কাঙ্গভাটা আমাকে উদ্দেশ্য করে একটা চক্কর কাটল । তারপর সেটা আকাশে উড়ে গেল । আমি ছাদে দাঁড়িয়ে তাকে দেখছিলাম । সেটা আমার দিক থেকে আরও দূরে যেতে লাগল । শেষ পর্যন্ত আমার আর তাকে দেখা গেল না ।
কাঙ্গভাটাটা চলে গেলেও তার কথা আমার মনে থেকে যায় । আমি ভাবি সেটা একটা কত সুন্দর পাখি । আমি ভাবি সেটা কতটা বিপদে পড়েছিল । আমার জন্য সেটা কতটা ভাগ্যবান হয়েছে । আমি ভাবি কাঙ্গভাটার ওই মিষ্টি শব্দটা কতটা মধুর ছিল । আমি ভাবি কাঙ্গভাটার ওই এক চক্কর কাটাটা কতটা মনমোহনকারী ছিল ।