কাচাথিবু দ্বীপ: ভারত ও শ্রীলংকার দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দু




সুদূর বঙ্গোপসাগরে একটি ছোট্ট দ্বীপ রয়েছে যা ভারত ও শ্রীলংকার মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। সেই দ্বীপটির নাম কাচাথিবু।

কাচাথিবু, যা মাত্র দুই বর্গকিলোমিটার আয়তনের, বার্তা আদান-প্রদানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসাবে কাজ করে এবং দুই দেশের জন্য একটি সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সম্পদ হিসাবে বিবেচিত হয়। তবে, দ্বীপটির ওপর দুই দেশেরই দাবি রয়েছে, যা এই অঞ্চলে তীব্র উত্তেজনা ও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করেছে।

ভারত দাবি করে যে দ্বীপটি তার অংশ, কারণ এটি ১৯৬২ সালে আদান-প্রদান চুক্তির অধীনে শ্রীলংকার কাছ থেকে ১৭ টি দ্বীপের এক অংশ হিসাবে পেয়েছে। অন্যদিকে, শ্রীলংকা দাবি করে যে দ্বীপটি তার ঐতিহাসিক জলসীমার অংশ, এবং ভারতে হস্তান্তরের চুক্তি কখনোই সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়নি।

এই দ্বন্দ্বের ফলে বছরের পর বছর ধরে দুই দেশের মাঝে কূটনৈতিক উত্তেজনা এবং মাঝেমধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়েছে। ২০১৭ সালে, একটি ভারতীয় মাছ ধরার নৌকা কাচাথিবুর কাছে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী কর্তৃক আটক করা হয়, যা দুই দেশের মধ্যে একটি বড় কূটনৈতিক সংকট সৃষ্টি করে।

কাচাথিবু দ্বন্দ্বের সমাধান দুই দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি প্রতিবন্ধকতা হিসাবে কাজ করছে এবং অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ব্যাহত করছে। যদিও উভয় দেশই দ্বন্দ্বের সমাধানে আগ্রহী, তবে যে দাবিগুলি শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা করার কোন সহজ উপায় নেই।

দ্বীপটির ওপর দাবির বাইরে, কাচাথিবু তার প্রাকৃতিক সম্পদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এতে মাছ ধরার প্রচুর সুযোগ রয়েছে এবং এটি সম্ভাব্য তেল এবং গ্যাসের ভंडার হতে পারে। এই সম্পদগুলির দ্বন্দ্বের সমাধানকে আরও জটিল করে তুলছে, কারণ উভয় দেশই তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বার্থের সুরক্ষা করতে চায়।

কাচাথিবু দ্বন্দ্ব একটি জটিল এবং বহুমুখী বিষয়, যার কোন সহজ সমাধান নেই। এটি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ এবং এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কাচাথিবু দাবির সমাধান করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যা ভারত ও শ্রীলংকার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত করতে এবং অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।