কঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস
তোমার যদি দার্জিলিং ঘুরে আসার ইচ্ছা থাকে, অথবা কঞ্চনজঙ্ঘার সামনে বসে এক কাপ চা খাওয়ার স্বপ্ন থাকে, তাহলে নিশ্চয়ই খুব উৎসাহী হয়ে উঠবে যখন তুমি জানবে যে কলকাতা থেকে দার্জিলিংয়ের সরাসরি একটি ট্রেন আছে। কঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, যা 2014 সালে চালু হয়েছিল, তা দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের (DHR) একটি প্রকল্প।
এই ট্রেনের জার্নি হল একটা অন্যরকম অভিজ্ঞতা। ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত 78 কিলোমিটারের যাত্রাপথকে প্রায় 7 ঘণ্টায় শেষ করে, এবং এই যাত্রাপথে সে অত্যন্ত মনোরম চা বাগান, ঘন জঙ্গল এবং উঁচু পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে যায়। রুটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশটি হল মিরিক লুপ এবং বাতাসিয়া লুপ, যেখানে ট্রেনটি একটি কাঁচা সুতার মতোঁ ঘুরে বেঁকে উঠে।
কঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ভ্রমণের সবচেয়ে ভালো সময় অক্টোবর থেকে মার্চ মাস। এই সময়ের মধ্যে আকাশ পরিষ্কার থাকে ও বৃষ্টির সম্ভাবনা খুব কম থাকে, তাই তুমি কঞ্চনজঙ্ঘা ও অন্যান্য হিমালয়ের চূড়াগুলোর স্পষ্ট দৃশ্য উপভোগ করতে পারবে। তুমি যদি এই ট্রেনে ভ্রমণ করতে চাও, তাহলে তোমার আগে থেকেই টিকিট বুক করে রাখা উচিত। টিকিট সাধারণত দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের ওয়েবসাইটে বা তাদের লোকাল টিকেট অফিসে পাওয়া যায়।
যাত্রার জন্য তোমাকে অবশ্যই ভোর বেলায় উঠতে হবে, কারণ ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সকালে 7টায় ছাড়ে। ট্রেনটিতে তিনটি শ্রেণীর সিটিং আছে: চেয়ার কার, ফার্স্ট ক্লাস এবং সেকেন্ড ক্লাস। চেয়ার কার হল সবচেয়ে সুলভ শ্রেণী, এবং এটিতে বিস্তীর্ণ আসন এবং বড় জানালা আছে। ফার্স্ট ক্লাসে আরও বড় আসন এবং আরও সুবিধা রয়েছে, এবং সেকেন্ড ক্লাস হল সবচেয়ে সাশ্রয়ী শ্রেণী।
যাত্রার সময় তুমি ট্রেনের রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে খেতে পারবে, অথবা নিজের খাবার নিয়ে যেতে পারবে। রেস্তোরাঁটিতে বিভিন্ন ধরনের খাবার পাওয়া যায়, যেমন স্যান্ডউইচ, ম্যাগি নুডলস এবং চা। ট্রেনটিতে টয়লেট এবং শৌচগৃহও রয়েছে।
দার্জিলিং পৌঁছানোর পর তুমি সেখানকার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে পারবে, যেমন টাইগার হিল, দার্জিলিং জু এবং ভিক্টোরিয়া ফলস। তুমি দার্জিলিংয়ের বিখ্যাত চা বাগানও ঘুরে দেখতে পারবে, এবং বিভিন্ন ধরনের চা কিনতে পারবে।
কঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস হল পাহাড়ের রানী দার্জিলিং ভ্রমণ করার একটা দুর্দান্ত উপায়। এই যাত্রাপথটি সুন্দর দৃশ্যপট এবং অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা দুটোই উপহার দেয়। তুমি যদি কখনো দার্জিলিং ভ্রমণ করার পরিকল্পনা করো, তাহলে তুমি কঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ভ্রমণ করার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করবে।