কোটাক
কোটাক নামটি শুনে আপনার মনে প্রথমেই কী আসে? হয়তো কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাংক অথবা কোটাক সিকিউরিটিজ। কিন্তু কি জানেন এটি আসলে কী?
কোটা বলতে একটি নির্দিষ্ট নৃগোষ্ঠী, আদিবাসী গোষ্ঠী অথবা ভাষাভাষীদের জন্য রাষ্ট্রের সরকারী চাকরি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাগুলিতে নির্দিষ্ট শতাংশ বা কোটা সংরক্ষণকে বোঝায়।
ভারতে কোটার ব্যবস্থাটি স্বাধীনতার পর থেকেই প্রচলিত। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বিশেষভাবে পিছিয়ে থাকা শ্রেণীগুলির (যেমন অনুসূচিত জাতি, অনুসূচিত উপজাতি এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণী) সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত করা এবং তাদের মূলধারার সমাজে অন্তর্ভুক্ত করা।
কোটার সংরক্ষণের বিষয়টি প্রায়শই বিতর্কিত। সমর্থকরা যুক্তি দেন যে এটি একটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, যা সামাজিক বিচার নিশ্চিত করে এবং ঐতিহাসিক অন্যায়ের প্রতিকার করে। তারা উদাহরণ দেন যে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীগুলি এখনও শিক্ষা, চাকরি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রগুলিতে অনেকাংশে প্রতিনিধিত্বহীন রয়েছে।
বিরোধীরা যুক্তি দেন যে কোটা ব্যবস্থাটি বৈষম্যমূলক, যা যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে সুযোগ-সুবিধা প্রদানের নীতিকে অস্বীকার করে। তারা আরও দাবি করেন যে এটি মেধাবিদের জন্য অন্যায়, যাদের কেবল তাদের জাতি বা সম্প্রদায়ের কারণে কিছু সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়।
কোটা সংরক্ষণের বিষয়টি জটিল এবং এর কোনো সহজ উত্তর নেই। এটি একটি সমস্যা যা বহু বছর ধরে ভারতে আলোচনা করা হয়েছে এবং আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়।
বর্তমানে, ভারতের সংবিধানে "অনুসূচিত জাতি" (SC) এবং "অনুসূচিত উপজাতি" (ST) এর জন্য 15% কোটা রয়েছে। এছাড়া, অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণীগুলির (OBC) জন্য 27% সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে।
কোটা সংরক্ষণের তর্ক প্রসঙ্গে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, এটি শুধু সংখ্যার বিষয় নয়। এটি একটি সামাজিক বিচারের বিষয়, একটি সময়ী শোধের বিষয়। আমরা সবাই একটি ন্যায্য এবং সমতার ভারত কামনা করি, যেখানে প্রত্যেকে নিজের সম্ভাবনা অনুসারে সফল হতে পারে, তাদের জন্ম বা সম্প্রদায়ের কারণে নয়।