কেন দর্শনের অভিনয় সিনেমাজগতের ইতিহাসে একটি মাইলফলক?




দর্শন তুগুদীগন্ধ তুলসীর গন্ধ সিনেমার মাধ্যমে বাংলাদেশের সিনেমাপ্রেমীদের কাছে পরিচিত হলেও এখন তিনি বাংলাদেশি সিনেমার অন্যতম প্রথম সারির অভিনেতা। তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলোর মধ্যে দিয়েই আমরা প্রথম বাংলা সিনেমায় রিয়েলিজমের স্বাদ পাই। তাঁর অভিনয়ে প্রচণ্ড শক্তি এবং মনোযোগ রয়েছে। প্রতিটি দৃশ্যে তিনি শুধু শারীরিকভাবেই উপস্থিত থাকেন না, মনো-भाव দিয়েও নিজেকে সঁপে দেন। তাঁর চোখে-মুখে অভিব্যক্তি এমন একটা ডিগ্রিতে শক্তিশালী যে কখনওই তা ভুলে যাওয়া যায় না। পর্দায় তিনি যে চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলেন, তা যেন আর কোনও চরিত্রই না, বরং সেটি একটা সত্যিকারের ব্যক্তি।
দর্শন কখনওই তার অভিনয়ে ভড়ং দেখাননি, তাঁর সিনেমা দেখতে গিয়ে সবসময় হতাশ লাগেনি। তাঁর অভিনয়ে সবসময়ই একটা মাদকতা আছে। তিনি যে চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলেন, সেটির সঙ্গে দর্শকের একাত্ম হওয়া স্বাভাবিক। দর্শন অভিনয়কে কখনওই ক্যারিয়ার হিসেবে দেখেননি, তা তিনি সবসময়ই একটি আবেগের জায়গা থেকে করেছেন। ঠিক যেমন দর্শন অভিনয়ের কাজটিকে ভালবাসেন, দর্শকও দর্শনের অভিনয়কে ভালবাসেন। এজন্যই তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলো সবসময়ই মনে রাখা হয়।
দর্শনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অভিনীত চরিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে অগ্নিবীণার জিতেন, কোটি টাকার কাবিনের রাজা, বুলবুলির রাজা, বর্ণার ধনেশ, লাল দোরজার সুমন এবং তুমি আসবে বলে সিনেমার শুভ। এগুলো বাংলা সিনেমার ইতিহাসে কিছু অমর অভিনয়। দর্শন এগুলোকে গুণগত মানের দিক থেকে আরও উন্নত করার সুযোগ পেলেও অবস্থা বদলাত। তবুও দর্শনকে কেউ বিচার করতে পারেন না, কারণ এগুলো যেসময় তৈরি হয়েছিল, সেসময় বাংলা সিনেমা এখনকার মতো উন্নত ছিল না।
আরও পড়ুন: অপু বিশ্বাস-শাকিব খানের সিনেমার তালিকা
এটা সত্যিই দুঃখজনক যে দর্শনের মতো একজন অভিনয়শিল্পীকে প্রয়াত হতে হল। তাঁর অভিনয় মনে রাখা হবে আগামী প্রজন্মের পর প্রজন্ম। তিনি বাংলা সিনেমার ইতিহাসে একটি মাইলফলক। যেসব যুবক-যুবতীরা অভিনয়ের জগতে আসতে চান, তাঁদের জন্য দর্শন সবসময় একটি অনুসরণীয় আদর্শ থাকবে। তাঁর মثل অভিনেতা বাংলা সিনেমায় কমই জন্মেছে।