কোলকাতা ও শিমলা: দুই ভিন্ন সংস্কৃতি, একটি অদম্য ভালবাসা




শিমলায় আজও রয়েছে অনেক বাঙালি 가ড়ল। সেই গড়লের ঠাকুমাদের নামের শেষে আজও লেগে আছে দেবী বা দেবীর নামের শেষাংশ, দুর্গাদেবী, শ্যামা দেবী। এমন অনেক ঠাকুমাকে সুযোগ পেলেই পায়ের ধুলো নিয়ে নমস্কার করতে পারেন। তাঁরা আরো আনন্দিত হবেন, যদি কিছুক্ষণ তাঁদের সাথে বসে কথা বলেন। একটু আলাপ করলেই বুঝতে পারবেন যে, বাংলা ভাষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির প্রতি তাঁদের ভালোবাসা আজও অটুট রয়েছে। এই প্রেম পাওয়ার জন্য কষ্ট করতে হবে না। শিমলায় এখনও রয়েছে বেশ কয়েকটি বাংলা পাঠাগার, যেখানে এলোমেলোভাবে সাজানো হয়ে আছে অনেক বইপত্র, পুরানো পুস্তিকা, পত্রিকা। সেখানে বসে অনেকক্ষণ সময় কাটিয়ে দিতে পারেন। হয়তো, পুরনো কোনও স্মৃতির আবিস্কার ঘটবে আপনার।
এখানে অনেক বাঙালি হোটেল রয়েছে, যাদের খাবারের স্বাদ এখনও রয়েছে সেই আগের মতো। সরভাজা, রসমালাই, লুচি, ঘুগনি— এই খাবারগুলিকে অনেকেই বলে থাকেন বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই খাবারগুলির স্বাদ শিমলার বাঙালি হোটেলগুলিই উপহার দিতে পারে আপনাকে।
শিমলায় একটু ঘোরাঘুরি করলেই বুঝতে পারবেন যে, এই পাহাড়ি শহরে বাঙালি সংস্কৃতির ছাপ সুস্পষ্ট। এই শহরের রেস্তরাঁ গুলির মেনুতে বাঙালি খাবারের অনেক রকমফের আছে। শুধুমাত্র খাবারই নয়, শিমলার ভাষায়ও বাংলা ভাষার প্রভাব রয়েছে। এখানকার অনেক রাস্তার নামকরণও বাংলার সাথে জড়িত। পাহাড়ের উপরে ওঠার সময়ে হেলিওডরাস নামক একটি রাস্তা পার হতে হবে। অনেকেই হয়তো জানেন না যে, হেলিওডরাস ছিলেন গ্রীক রাজদূত, যিনি খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকের প্রথম দিকে ভারতের রাজা অগ্নিমিত্রের দরবারে এসেছিলেন। এই হেলিওডরাসই প্রথম শিমলা শহরটির উল্লেখ করেছিলেন তাঁর রচনায়। তিনি একে বলেছিলেন শ্যামলা। শ্যামলার অপভ্রংশ থেকেই শিমলা নামের উৎপত্তি।
কোলকাতা ও শিমলা—এই দুই শহরের মাঝে সম্পর্ক কেবল ভূগোলের সীমানার বাইরে। এই দুই শহরের মাঝে সম্পর্ক বহু বছরের। এই দুই শহরের বাঙালিরা দুই ভিন্ন সংস্কৃতির হলেও তাদের ভালোবাসা অদম্য।