কালীঘন মেঘের কালবৈশাখী



ভূমিকা:
বর্ষার রবো হয়ে উঠেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, মেঘের আড়ালে রয়েছে সূর্যদেব। মেঘে সঘনতা, জলবাষ্পের মাত্রাও বেশ। তাই সকাল থেকেই একটা অস্বস্তি, একটা অসহ্য দমবন্ধ অবস্থা। বুকটা যেন চিনচিন করে। তার ওপর ভ্যাপসা গরম। বাতাসের বইচলা নেই বললেই চলে। আকাশটা ক্রমশ গাঢ় হতে শুরু করলো। মনে হচ্ছে, বৃষ্টি হবে বলে।
বৃষ্টির মুখরতা:
দুপুরে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। বৃষ্টির ছত্র প্রথমে ছিল খুবই তালগোল পাকানো। বৃষ্টির কি জোড়ই না। আকাশ ফেটে পড়ছে বলে মনে হচ্ছে। কী দারুণ জোরালো সে বৃষ্টি। রাস্তা-ঘাট সব কিছুই জলমগ্ন। বৃষ্টিতে ভিজে সারা পৃথিবী যেন ধুয়েমুছে নতুন জীবন পেতে চায়।
বৃষ্টির উপকারিতা:
বৃষ্টি যেমন শীতলতা দেয়, তেমনি পৃথিবীতে নতুন উজ্জীবনী শক্তি সঞ্চার করে। গাছপালা থেকে শুরু করে জন্তুজানোয়ার, পাখপাখালি, প্রাণীকুল সবাই যেন নতুন প্রাণ পায়। কৃষকের মুখে ফুটে ওঠে আশার হাসি। শুধু কি কৃষকই, শিশুরাও কম খুশি হয় না। আনন্দে তারা ছুটে বেড়ায় বৃষ্টির জলে ভিজে।
বৃষ্টির পূর্বাভাস:
বর্ষায় বৃষ্টি তো হয়ই। তবে বৃষ্টির পূর্বাভাসও সঠিকভাবে বলা হয় টেলিভিশন ও রেডিওতে।আকাশের মেঘ দেখে অনেক সময় বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয়।আবার কখনও আকাশের মেঘের অবস্থা দেখেও বুঝা যায় বৃষ্টি হবে। তবে বৃষ্টির পূর্বাভাস পেলেও কখনও কখনও হয় না। আবার কখনও পূর্বাভাস না দিয়েই হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়।
বৃষ্টির উপসহযোগী বজ্র:
মেঘের গর্জনের সঙ্গে বজ্রের শব্দ। এই শব্দখানি বিরাট আতঙ্কপূর্ণ। দেখতে দেখতেই আকাশ কালো রঙে ছেয়ে যায়, দিকভ্রান্ত হয়ে যাওয়ার উপক্রম। সঙ্গে আবার বাতাসও তো হয়ই। আর তখন তো মানুষের দৌড়ঝাঁপ শুরু।
বৃষ্টির সৌন্দর্য:
তবে এই বর্ষা শুধু ভয় বা অস্বস্তি দেয় তা কিন্তু নয়। বর্ষার আছে নিজস্ব এক অপূর্ব সৌন্দর্য। বৃষ্টির পর আকাশের রঙিন মেঘ, জলের ফোঁটায় সিক্ত পৃথিবী, সব কিছুর ওপর ঝলমল করছে সূর্যের রশ্মি। মনে হয় যেন সারা পৃথিবীটা হয়ে উঠেছে এক জাদুর রাজ্য। এই বৃষ্টি দেখে মনটাই ভাল হয়ে যায়। সারা শরীরটা যেন হয়ে ওঠে হালকা।
উপসংহার:
এই বর্ষা মাঝে মাঝে আমাদের অসুবিধা দেয়। তবে বর্ষা তার অপূর্ব সৌন্দর্যের জন্য আবার আমাদের মনকেও জুড়িয়ে নেয়। আমাদেরকে তার মোহমুক্ত করা কখনও সম্ভব নয়। এই বর্ষা আমাদের জীবনে নতুনত্ব, আমাদের মনকে ভিজিয়ে নতুন উদ্দীপনা, সজীবতা দিয়ে।