কৃষ্ণকুমার কুন্নথঃ কে ছিলেন কে.ক.?




কৃষ্ণকুমার কুন্নথ (২৩ আগস্ট, ১৯৬৮ - ৩১ মে, ২০২২), যিনি কে.কে. নামে পরিচিত ছিলেন, একজন প্রখ্যাত ভারতীয় প্লেব্যাক সিঙ্গার। মূলত তামিল, তেলুগু, কন্নড় এবং মালয়ালম সহ হিন্দি ভাষায় অসংখ্য গান রেকর্ড করেন তিনি। নানান ধারার গানে তার বহুমুখী বিচরণের জন্য কে.কে.-কে ভারতের অন্যতম সেরা প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

প্রারম্ভিক জীবন এবং শিক্ষা

কে.কে. ২৩ আগস্ট, ১৯৬৮ সালে দিল্লিতে এক মালয়ালী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার যখন তিন বছর বয়স, তখন তার পরিবার দিল্লি থেকে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুর ত্রিচিতে চলে যায়। তিনি ত্রিচিতেই বেড়ে ওঠেন এবং তার স্কুল জীবন কাটান।
তার সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ অল্প বয়স থেকেই ছিল। স্কুলে থাকতেই তিনি সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন। তিনি দিল্লির মন্টফোর্ট স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

গায়ক হিসেবে কর্মজীবন

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সময় কে.কে. বিভিন্ন কলেজ স্তরের সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শুরু করেন। ১৯৯৪ সালে, তিনি সনি মিউজিক কর্তৃক আয়োজিত একটি সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং রানার-আপ হন। এই প্রতিযোগিতায় তার কণ্ঠ শুনে লালিত সেন তাকে মুম্বাই আসার জন্য উৎসাহ দেন।
মুম্বাইতে, কে.কে. প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞাপন এবং জিঙ্গেলের জন্য গান করতেন। তিনি তামিল চলচ্চিত্র "কেডারনাথ" (১৯৯৯) দিয়ে প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসাবে অভিষেক করেন। এরপরে তিনি হিন্দি চলচ্চিত্র "নাটু হিন্দুস্তান কে" (১৯৯৯) দিয়ে হিন্দিতে গান করার সুযোগ পান।
তার কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট আসে ২০০০ সালে, যখন তিনি হিন্দি চলচ্চিত্র "হম দিল দে চুকে সনম" এর জন্য "তাড়প তড়প কে ইস্হার" গানটি গান। এই গান তাৎক্ষণিকভাবে জনপ্রিয়তা পায় এবং কে.কে. হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্পে স্বীকৃতি পান। এরপর তিনি "মেরে মেরে" (মুঝে হ্যাঁ নায়ে") (২০০৪), "তুমহী হো" (জান্নাত) (২০০৮), "খুদা জানে" (বচ্চনা অ্যা হাসিনো) (২০০৮), "দিল ইবাডাত" (টুম মিলে) (২০০৯), "তুম মিলে" (টুম মিলে) (২০০৯) সহ অসংখ্য হিট গান দেন।

ব্যক্তিগত জীবন

কে.কে. ১৯৯১ সালে জ্যোতি কৃষ্ণকে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তান- একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে।

মৃত্যু

কে.কে. ৩১ মে, ২০২২ সালে কলকাতার নজরুল মঞ্চে এক লাইভ কনসার্ট করার পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মারা যান। তার মৃত্যু ভারতীয় সঙ্গীত শিল্পে একটি বড় ক্ষতি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

বিরাট

কে.কে. ছিলেন একজন প্রতিভাবান এবং প্রিয় সিঙ্গার। তিনি তার গানের মাধ্যমে মানুষের হৃদয় জয় করেছেন। তার গান আজও অগণিত মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা ও মনোরঞ্জনের উৎস। তার সঙ্গীতের বিরাট ভারতীয় সঙ্গীত শিল্পকে সমৃদ্ধ করেছে এবং তার স্মৃতি চিরকাল সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদয়ে বাঁচবে।