কৃষ্ণানন্দ রায়




আপনারা অনেকেই এই নাম শুনেছেন। কিন্তু কে এই কৃষ্ণানন্দ রায়? তিনি কী করেছেন? আজকে আমরা জানব এই বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের সম্পর্কে।
কৃষ্ণানন্দ রায় ছিলেন একজন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজ সংস্কারক এবং আধ্যাত্মিক নেতা। তিনি ১৮৮৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার মন্দারমনি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল রামচন্দ্র রায় এবং মাতার নাম ছিল লক্ষ্মীপ্রিয়া রায়।
কৃষ্ণানন্দ রায়ের শৈশব অতিবাহিত হয় গ্রামের একটি দরিদ্র পরিবারে। তিনি ছোট বেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি মাত্র ১২ বছর বয়সে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশ করেন। এরপর তিনি কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন।
সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়ার সময় কৃষ্ণানন্দ রায় ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন দ্বারা অনুপ্রাণিত হন। তিনি যুবকদের মধ্যে স্বাধীনতা আকাক্সক্ষা জাগিয়ে তোলার জন্য একটি সংগঠন গঠন করেন। এই সংগঠনের নাম দেওয়া হয় "অনুশীলন সমিতি"।
অনুশীলন সমিতি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন হয়ে ওঠে। এই সংগঠনের সদস্যরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন করতেন। কৃষ্ণানন্দ রায় অনুশীলন সমিতির অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন। তিনি বহুবার ব্রিটিশ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার এবং কারাবাসের শিকার হন।
ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের পর কৃষ্ণানন্দ রায় সমাজ সংস্কারের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি হরিজন সেবা, নারী শিক্ষা এবং গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য কাজ করতেন। তিনি অনেকগুলি বিদ্যালয়, হাসপাতাল এবং আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছেন।
কৃষ্ণানন্দ রায়ের আধ্যাত্মিক জীবন অত্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল। তিনি ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দর অনুগামী। তিনি বেদান্ত দর্শন ও রাজযোগের প্রচারক ছিলেন। তিনি মনে করতেন যে সকল ধর্মের মূল লক্ষ্য হল আত্মজ্ঞান।
কৃষ্ণানন্দ রায় ১৯৬৭ সালে ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু ভারতের জন্য একটি বড় ক্ষতি ছিল। তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব যিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং সমাজ সংস্কারে অসাধারণ অবদান রেখেছেন।
আমাদের সকলের উচিত কৃষ্ণানন্দ রায় এর জীবনী থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন যে মনবল এবং দৃঢ়তা দিয়ে যে কোনো লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন যে সকল মানুষের সেবা করা আমাদের সকলের কর্তব্য।