কুয়েত অগ্নিকাণ্ড




কুয়েতের জীবনে একটি সংক্ষিপ্ত ঝলক: কিভাবে একটি সত্য ঘটনা আমার জীবনকে পাল্টে দিয়েছে

১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময়ে, যখন কুয়েতে মিত্রবাহিনী ইরাকি বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করছিল, তখন আমি প্রথমে কুয়েত লিবারেশন আর্মি (কেএলএ) এর সদস্য ছিলাম। সেই সময় আমি কুয়েতের গভর্নরদের কাছ থেকে দায়িত্ব পেয়েছিলাম সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোকে আগুন থেকে রক্ষা করার জন্য।

যুদ্ধের সময় ইরাকি বাহিনী কুয়েতের জল উৎসে আগুন লাগিয়েছিল। এই আগুন ছিল এতটাই বড় যে, এটি আকাশকে কালিমায় পরিণত করেছিল এবং কুয়েত শহরে ধোঁয়ার কুণ্ডলী তৈরী করেছিল। সেই সময় আমাদের কাজ ছিল এই আগুনগুলো নিভিয়ে ফেলা এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোকে রক্ষা করা।

আমরা প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা ধরে কাজ করছিলাম। আমাদের সঙ্গে ছিল লিটার লিটার পানি, যা দিয়ে আমরা আগুন নিভিয়ে দিচ্ছিলাম। আমরা এতটাই ক্লান্ত হয়ে যেতাম যে, কখনো কখনো আমরা আগুন নিভানোর সময়ই ঘুমিয়ে পড়তাম।

এক দিন, আমরা একটি সরকারি ভবনের সামনে একটি বড় আগুন নিভিয়ে দিচ্ছিলাম। আগুনটি এতটাই বড় ছিল যে, আমরা এটিকে নিভাতে পারছিলাম না। আমরা অনেক চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু আমাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। আগুনটি এতটাই বড় হয়ে গিয়েছিল যে, এটি ভবনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল।

আমরা জানতাম যে, যদি আমরা আগুনটি নিভাতে না পারি, তাহলে ভবনটি পুরে যাবে এবং অনেক মানুষের মৃত্যু হবে। আমরা আরো জানতাম যে, যদি আমরা এখান থেকে পালিয়ে যাই, তাহলে আমাদের উপর মামলা হবে এবং আমাদের জেল হবে।

আমরা বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে आग জ্বালিয়েছিলাম, কিন্তু আমরা এটিকে নিভাতে পারছিলাম না। আমরা আশা হারিয়ে ফেলছিলাম। কিন্তু তারপর, আমরা একটি চমৎকার ঘটনা দেখলাম। একটি ছোট ছেলে দৌঁড়ে এলো এবং এক বালতি পানি নিয়ে এলো। সে আমাদের দিকে পানিটা ছুঁড়ে দিল এবং বলল, "আগুন নিভিয়ে দাও।"

ছেলেটির পানিটি কাজ করল না। কিন্তু সেটি আমাদের আশা ফিরিয়ে দিল। আমরা আবার চেষ্টা করেছিলাম এবং অবশেষে আগুনটি নিভিয়ে দিয়েছিলাম।

আমরা ছেলেটির কাছে ধন্যবাদ জানাতে গিয়েছিলাম। সে বলল, "আমায় ধন্যবাদ দিও না। তোমরা আমার দেশকে রক্ষা করছো। তোমরা আমার হিরো।"

ছেলেটির কথাগুলো আমাকে খুব স্পর্শ করেছিল। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, আমাদের কাজটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কুয়েতের মানুষদের জীবন রক্ষা করছিলাম এবং তাদের দেশ রক্ষা করছিলাম।

আমি সেই অভিজ্ঞতাটি কখনো ভুলব না। এটি আমাকে শিখিয়েছে যে, আমরা সবাই একটি আরেকজনের জন্য কিছু করতে পারি। আমরা সবাই যদি একসাথে কাজ করি, তাহলে আমরা কিছুই অর্জন করতে পারি।