কী সেই অ্যাঞ্জেল ট্যাক্স




আর কয়েকটা বছর আগেও অ্যাঞ্জেল ট্যাক্স নামটা আমাদের কাছে অপরিচিত ছিল। এটা হঠাতই এক আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে চমকপ্রদ ভাবে।

অ্যাঞ্জেল ট্যাক্স বলতে বোঝায়, কোনও স্টার্টআপে বিনিয়োগের জন্য কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা যখন কোনও অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর থেকে অর্থ গ্রহণ করে, তখন তাকে অ্যাঞ্জেল ট্যাক্স দিতে হয়। সাধারণ ভাবে, স্টার্টআপে বিনিয়োগের জন্য অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টরদের হাত ধরে আসা অর্থই একমাত্র পথ। কারণ, স্টার্টআপের প্রাথমিক পর্যায়ে, সাধারণত ব্যাঙ্কগুলি তাদের কোনও লোন দেয় না।

আর কী এটা অ্যাঞ্জেল ট্যাক্সের কারণ

  • সাধারণত স্টার্টআপের শেয়ার প্রিমিয়ামে বিক্রি হয়। কারণ, স্টার্টআপের শেয়ারে বিনিয়োগ করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ।
  • সেই শেয়ার যখন প্রিমিয়ামে বিক্রি হয়, তখন সংস্থার মূল্য আরও বেড়ে যায়। অতএব, তখন অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টরের বিনিয়োগ করা টাকা লাভের সঙ্গে সঙ্গেই, সংস্থার মূল্য বৃদ্ধির সুযোগও পায়। যার ফলে, আপনাকে ৩০ শতাংশ সরকারি ট্যাক্স দিতে হয়।
  • অনেক সময় স্টার্টআপের আয় খুব কম থাকে। তাই লাভের কথা ভাবাটাই স্বপ্নের মতো। তা সত্ত্বেও এই ট্যাক্স দিতে হয়।

কী ভাবে হয় স্টার্টআপের মূল্যায়ণ

প্রাথমিক পর্যায়ে স্টার্টআপের মূল্যায়ণ হয় সরকারি স্বীকৃত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের দ্বারা। তাঁদের প্রদত্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হয় স্টার্টআপ সংস্থার।

কী ভাবে গণনা হয় অ্যাঞ্জেল ট্যাক্স

অ্যাঞ্জেল ট্যাক্সের পরিমাণ গণনা করা হয় এই ভাবে:

  • প্রথমে অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টরের পক্ষ থেকে বিনিয়োগ করা অর্থ থেকে বের করা হয় স্টার্টআপের নেট অ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি)।
  • স্টার্টআপের মূল্যায়ণ এবং এনএভির মধ্যে পার্থক্যটিকেই বলা হয় প্রিমিয়াম।
  • সেই প্রিমিয়ামের ওপরই ৩০ শতাংশ ট্যাক্স গণনা করা হয়।

সমস্যা কী

এটা একটা অযৌক্তিক, অসম্মানজনক এবং স্টার্টআপ এবং অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টরদের জন্য হতাশাজনক ট্যাক্স। কারণ, এটা তাঁদের ব্যবসা চালানোর আকাঙ্ক্ষাকে হত্যা করে দিচ্ছে। এমনিতেই ভারতের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমটি দুর্বল। এই ট্যাক্স তাকে আরও দুর্বল করে তুলছে।

ভারতে হাজার হাজার স্টার্টআপ রয়েছে, যারা অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টরদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ব্যবসা চালাচ্ছে। তাঁদের এই অসহনীয় ট্যাক্সের মার হতে বাঁচানো প্রয়োজন। ভারতের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমটিকে বাঁচাতে অ্যাঞ্জেল ট্যাক্স সরানো প্রয়োজন।