কি সত্যিই তেলেঙ্গানার ফোন ট্যাপিং কাণ্ড হচ্ছে ‘গোয়েন্দা বিভাগের বিরাট ভুল’ ?




যখন থেকে তেলেঙ্গানা ফোন ট্যাপিং কাণ্ডটি সামনে এসেছে, তখন থেকেই একের পর এক নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। আসুন একবার ফিরে দেখা যাক এই ঘটনার কালানুক্রমিক বিবরণ:

ঘটনাক্রমঃ
  • অক্টোবর ২০১৯ঃ তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ফোন ট্যাপিংয়ের অভিযোগ আদালতে দায়ের করেন কেসিআরের উকিল।
  • নভেম্বর ২০১৯ঃ প্রাথমিক তদন্তে তেলেঙ্গানা সরকারের ১০ জন কর্মকর্তা এবং ১২ জন বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
  • মে ২০২০ঃ তেলেঙ্গানা হাইকোর্ট মামলাটি কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই) কে দেয়।
  • সেপ্টেম্বর ২০২০ঃ সিবিআই তদন্ত শুরু করে।
  • ফেব্রুয়ারি ২০২৩ঃ সিবিআই মামলাটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এটিকে ‘গোয়েন্দা বিভাগের বিরাট ভুল’ বলে উল্লেখ করে।
প্রাথমিক তদন্তের প্রধান অভিযোগঃ

প্রাথমিক তদন্তে যে প্রধান অভিযোগ উঠে এসেছিল তার মধ্যে রয়েছে-

  • বিরোধী রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, বিচারক এবং ব্যবসায়ীদের ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে।
  • ট্যাপ করা কথোপকথনগুলিকে অবৈধভাবে রেকর্ড করা এবং ব্যবহার করা হচ্ছে।
  • মূল্যবান তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি বিশেষ তদন্ত টিম (এসআইটি) গঠন করা হয়েছিল।
সিবিআইয়ের তদন্তঃ

সিবিআইয়ের তদন্তে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে-

  • সাবেক আইসিটি মন্ত্রী কেটিআর রামা রাওর অপরাধের সাথে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
  • ফোন ট্যাপিংয়ের অনুমতি অবৈধভাবে দেওয়া হয়েছিল।
  • বিশেষ তদন্ত টিম (এসআইটি) গঠন করা অসাংবিধানিক ছিল।

সিবিআই যদিও স্পষ্টভাবে বলেছে যে এই ফোন ট্যাপিং ‘গোয়েন্দা বিভাগের বিরাট ভুল’ ছিল, তবে এটি কেন এবং কীভাবে ঘটেছে সে সম্পর্কে তারা কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়াঃ

বিরোধীরা সিবিআইয়ের রিপোর্টকে ‘ঢালাও’ বলে অভিযুক্ত করেছে। তাদের দাবি, সিবিআই তদন্তে কেবল কেটিআর রামা রাওকে বাঁচানো হয়েছে এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া হয়নি।

গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়াঃ

গণমাধ্যম এই ঘটনাকে ‘গুরুতর’ বলে বর্ণনা করেছে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

সরকারের প্রতিক্রিয়াঃ

তেলেঙ্গানা সরকার সিবিআইয়ের রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বিরোধীদের অভিযোগকে ‘নির্মূল’ বলে অভিহিত করেছে।

পরবর্তী পদক্ষেপঃ

তেলেঙ্গানা ফোন ট্যাপিং কাণ্ডটি একটি জটিল এবং বিতর্কিত বিষয়। সিবিআইয়ের তদন্তে যদিও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে, তবে এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর অজানা রয়ে গেছে। এই কাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে কিনা এবং ভবিষ্যতে এ জাতীয় ঘটনা প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা সময়ই বলবে।