কিং সালমান: সৌদি আরবের একজন দূরদর্শী নেতা




দেশকে হাল ফেটার সময় এসেছে বুঝলেন সৌদি আরবের রাজা কিং সালমান। দেশের অর্থনীতি ও সমাজকে আধুনিকতা ও উন্নতির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তিনি।
কিং সালমানের দূরদর্শিতার প্রমাণ মেলে ২০১৬ সালে তাঁর ঘোষিত "ভিশন ২০৩০" থেকে। এই ব্যাপক পরিকল্পনার লক্ষ্য হল সৌদি অর্থনীতিকে তেল নির্ভরতা কমানো এবং বৈচিত্র্যময় করা। ভিশন ২০৩০ পর্যটন, সৌরশক্তি এবং আর্থিক সেবা সহ নতুন খাতগুলিতে বিনিয়োগের আহ্বান জানায়।
কিং সালমানের অভ্যন্তরীণ সংস্কারগুলিও প্রশংসার যোগ্য। তিনি মহিলাদের গাড়ি চালানো এবং খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করার অনুমতি দিয়েছেন। তিনি ফ্লাগেলিং এবং শিরশ্ছেদের মতো নিষ্ঠুর শাস্তিও নিষিদ্ধ করেছেন।
আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়েও কিং সালমান একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি ইয়েমেনে একটি সামরিক অভিযান শুরু করেছেন, যার উদ্দেশ্য হল ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের অপসারণ করা। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে জোট বেঁধে কাতারের উপর অবরোধও আরোপ করেছেন।
কিং সালমানের অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক নীতি উভয়ই বিতর্কমূলক। তবে সৌদি আরবকে একটি আরও আধুনিক, উদার এবং উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য তাঁর অদম্য সংকল্প স্পষ্ট।
কিং সালমানের সমাজ সংস্কার
কিং সালমানের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য সংস্কারগুলির মধ্যে একটি হল মহিলাদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া। এটি একটি বিশাল পদক্ষেপ ছিল, কারণ সৌদি আরব ছিল একমাত্র দেশ যেখানে নারীদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ ছিল। এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য কিং সালমানের অনেক প্রশংসা করা হয়েছিল, এবং এটি সৌদি নারীদের জন্য একটি বড় বিজয় হিসেবে দেখা হয়েছিল।
কিং সালমান নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করার অনুমতিও দিয়েছেন। এটি আরেকটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ ছিল, কারণ সৌদি নারীদের আগে খেলাধুলার অধিকাংশ ফর্মে অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করা হত। এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ফলে সৌদি নারীরা ক্রীড়া ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং তারা অনেক ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে।
কিং সালমান ফ্লাগেলিং এবং শিরশ্ছেদের মতো নিষ্ঠুর শাস্তিও নিষিদ্ধ করেছেন। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি সৌদি আরবের মানবাধিকার রেকর্ডকে উন্নত করার লক্ষ্যে কিং সালমানের অঙ্গীকারের প্রমাণ।
কিং সালমানের আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নীতি
আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে কিং সালমান একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি ইয়েমেনে একটি সামরিক অভিযান শুরু করেছেন, যার উদ্দেশ্য হল ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের অপসারণ করা। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে জোট বেঁধে কাতারের উপর অবরোধও আরোপ করেছেন।
কিং সালমানের আঞ্চলিক নীতির জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচনা করা হয়েছে। ইয়েমেনে সামরিক অভিযান বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। কাতার অবরোধও বিতর্কিত, কারণ এটি খাদ্য ও ওষুধ সহ প্রয়োজনীয় পণ্যে কাতারের প্রবেশাধিকারকে সীমাবদ্ধ করেছে।
যাইহোক, কিং সালমানের আন্তর্জাতিক নীতির জন্যও প্রশংসা করা হয়েছে। তিনি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এবং সন্ত্রাসবাদ বিরোধী জোট গঠনে মূল ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্যও কাজ করেছেন।
কিং সালমান সৌদি আরবের একজন জটিল এবং দ্বিমুখী চরিত্র। তিনি একজন দূরদর্শী নেতা যিনি দেশকে আধুনিকীকরণ এবং উন্নতি করতে চান, কিন্তু তিনি একজন শক্তিশালী ব্যক্তিও যিনি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিতে ইচ্ছুক। কিং সালমানের উত্তরাধিকার আগামী বছরগুলিতেও আলোচনা ও বিতর্কের বিষয় থাকবে।