গুড়ি পড়বা কী?
গুড়ি পড়বা হল ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, যা চৈত্র মাসের প্রথম দিনে পালন করা হয়। এই উৎসবকে "নববর্ষ" বা "নতুন বছর" হিসাবেও উদযাপন করা হয়।
উৎপত্তি এবং কিংবদন্তি
গুড়ি পড়বার উৎস নিয়ে বিভিন্ন কিংবদন্তি রয়েছে। একটি কিংবদন্তি অনুসারে, এই উৎসব রামায়ণ মহাকাব্যের সঙ্গে যুক্ত। রাবণকে হত্যার পর রাম অযোধ্যায় ফিরে আসেন এবং দুষ্টের উপর ভালের জয়ের প্রতীক হিসাবে একটি গুড়ি (মাটির ঘট) ভেঙে ফেলেন। অন্য একটি মতানুযায়ী, গুড়ি পড়বা ভগবান বিষ্ণুর ত্রেতা যুগের সূচনাকে চিহ্নিত করে।
উদযাপন
গুড়ি পড়বা উদযাপনের মূল অংশে রয়েছে একটি "গুড়ি" বানানো। গুড়ি হল একটি সিলিন্ডার আকৃতির মাটির ঘট, যা পানি দিয়ে ভরা থাকে এবং গোবর দিয়ে সাজানো থাকে। তরুণরা সকালে উঠে গুড়ি বানায় এবং তাদের বাড়ির বাইরে খাড়া করে রাখে। তারা তারপর গুড়িগুলির উপর লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং সেগুলি ভেঙে ফেলে। এই কাজটি দুষ্টের উপর ভালের জয় এবং নতুন শুরুর প্রতীক হিসাবে দেখা হয়।
গুড়ি পড়বার দিনে লোকেরা তাদের বাড়ি পরিষ্কার করে এবং নতুন পোশাক পরে। তারা মিষ্টি খায় এবং পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটায়। কেউ কেউ মন্দিরে যায় এবং ভগবানের কাছে আশীর্বাদ চায়।
আঞ্চলিক বৈচিত্র্য
গুড়ি পড়বা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্নভাবে উদযাপন করা হয়। উত্তর ভারতে, উৎসবটি "রঙ্গ পঞ্চমী" নামেও পরিচিত এবং লোকেরা রঙিন পাউডার দিয়ে একে অপরকে ছোঁড়াছুড়ি করে। পশ্চিম ভারতে, উৎসবটি "উগাদি" নামে পরিচিত এবং এটি নৃত্য এবং সঙ্গীতের সঙ্গে উদযাপন করা হয়। দক্ষিণ ভারতে, উৎসবটি "যুগাদি" নামে পরিচিত এবং এটি নতুন শুরুর প্রতীক হিসাবে দেখা হয়।
উপসংহার
গুড়ি পড়বা হল ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব যেটি দুষ্টের উপর ভালের জয় এবং নতুন শুরুর প্রতীক হিসাবে উদযাপন করা হয়। এই উৎসবটি বিভিন্ন আঞ্চলিক বৈচিত্র্যের সঙ্গে পালন করা হয়, তবে এর মূল্যবোধগুলি সারা ভারত জুড়ে একই রকম। গুড়ি পড়বা একটি আনন্দদায়ক উৎসব যা সম্প্রীতি, মিলন এবং আশার বার্তা দেয়।