গানে বিচ্ছেদের কষ্টের প্রকাশ অনেক পুরানো। প্রাচীন গ্রীক কিংবা হিন্দু রামায়ণ মহাকাব্যেও প্রিয়জনকে হারানোর বেদনা প্রকাশ পেয়েছে। সেকালেও মানুষ দুঃখ কাটিয়ে ওঠার জন্য গানের আশ্রয় নিয়েছে। কালো কিছুদিন আগেও গান মানুষের অন্যতম চিকিৎসা ছিল। তবে আজকাল কতটা তা কাজে আসে, টেকনোলজির যুগে তার ওপর কী রয়েছে প্রভাব, সেটি নিয়ে আজ লিখব।
বিচ্ছেদের কষ্টের অন্যতম উপায় হল আবেগ প্রকাশ। আমরা হতাশা, বেদনা, রাগ, অসহায়ত্বের মতো নেতিবাচক আবেগগুলি দমন করি। কিন্তু একটা সময় পর্যন্ত। যখন আর দমন করা যায় না, তখন গানের শব্দগুলো আমাদের আবেগকে প্রকাশ করতে সাহায্য করে।
আমরা সবসময় আমাদের অনুভূতিগুলো কাউকে বলতে পারি না। সমাজিক ভীতি, বিচারের ভয় বা কখনও কখনও কেবল শব্দ খুঁজে না পাওয়ার কারণে আমাদের অনুভূতিগুলি গভীরে চেপে রাখতে হয়। গানগুলি এই ক্ষেত্রেও আমাদের সাহায্য করে। যেখানে শব্দ থেমে যায়, সেখানে গানগুলি আমাদের অনুভূতির অনুরণন খুঁজে পায়।
সঙ্গीतের সাহায্যে বিচ্ছেদের স্মৃতিও জাগরণে আসতে পারে। তবে এটি কিন্তু সব সময়ই দুঃখের সৃষ্টি করে না। অনেক সময় সুখের স্মৃতিও তাজা হয়ে আসে। গানের সঙ্গে কখনও কখনও কোনো ঘটনার সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। বিচ্ছেদের পরে কোনো ব্যক্তির জন্য কিছু গান শোনা অসহ্য হতে পারে। তবে কিছুদিন পরে সেই গানটিকে আবার নতুন করে স্মৃতির সঙ্গে জুড়ে নেওয়া হয়।
আজকাল প্রচুর বিচ্ছেদের কষ্টের গান রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে লিঙ্কিন পার্কের Numb, অ্যালিসিয়া কিজের If I Ain't Got You এবং ক্রেডের With or Without You। গানের সাহায্য নিতে কখনো কখনো সাহস লাগে। ভাবতে হয় কষ্টের ক্ষতকে আরও কেঁদে দিলে কী হবে? কিন্তু সত্যিকারে আবেগ প্রকাশ করলে, ব্যথা কমে যায়।
তবে সতর্ক থাকা প্রয়োজন যে গান খুব বেশিক্ষণ এবং খুব বেশি তীব্রভাবে শুনলে তা কখনও কখনও বিষণ্নতার কারণ হতে পারে। তাই গানের মাধ্যমে আবেগ প্রকাশ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।