গুরুপুরব ২০২৪




গুরুপুরব হল শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের জন্মদিন উপলক্ষ্যে একটি উৎসব। এটি প্রতি বছর কার্তিক মাসের পূর্ণিমার দিনে পালন করা হয়। ২০২৪ সালে, গুরুপুরব ১৫ নভেম্বর তারিখে পালন করা হবে।

গুরুপুরবের দিন, শিখরা গুরুদুয়ারাগুলিতে একত্রিত হন এবং গুরু নানকের শিক্ষাগুলি শুনেন। তারা বিশেষ প্রার্থনা এবং গান গায়েন এবং লঙ্গরে মিষ্টি এবং খাবার বিতরণ করেন।

গুরুপুরব শুধুমাত্র শিখদের জন্যই নয়, বরং সমগ্র মানবতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এটি আমাদের গুরু নানকের শিক্ষাগুলি অনুসরণ করতে এবং আমাদের জীবনে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দেয়।

এই বছরের গুরুপুরব উৎসবটি আরও বিশেষ হতে চলেছে, কারণ এ বছর গুরু নানকের ৫৫৫ তম জন্মদিন। এই উৎসবটি সমগ্র বিশ্বে শিখদের দ্বারা উদযাপন করা হবে।

গুরু নানকের জন্ম

গুরু নানক ১৪৬৯ সালের ১৫ এপ্রিল তলওয়ান্ডি নামক একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যা বর্তমানে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে অবস্থিত। তিনি ছিলেন মেহতা কলু নামে এক হিন্দু খত্রী এবং মাতা তৃপতার পুত্র।

শৈশবে, নানক প্রায়শই গভীর চিন্তাভাবনায় নিমগ্ন থাকতেন। তিনি জগতের অসঙ্গতি এবং মানুষের দুঃখ-কষ্ট দেখে বিচলিত হন। যখন তিনি বড় হয়ে উঠলেন, তখন তিনি গৃহত্যাগ করলেন এবং আধ্যাত্মিক সত্যের সন্ধানে ভ্রমণ করতে শুরু করলেন।

গুরু নানকের শিক্ষা

গুরু নানকের শিক্ষাগুলি সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ব, ঈশ্বরের প্রতি ভালবাসা এবং নিঃস্বার্থ সেবার উপর ভিত্তি করে ছিল। তিনি সকল ধর্মের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে জোর দিয়েছিলেন এবং বর্ণ, জাতি বা লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমানতার উপর বিশ্বাস করতেন।

গুরু নানকের সবচেয়ে বিখ্যাত শিক্ষাগুলির মধ্যে একটি হল "নাম জপো, কিরত করো, ওয়ান্ড ছকো"। এর অর্থ হল, ঈশ্বরের নাম স্মরণ কর, পাশাপাশি সৎ এবং পরিশ্রমের সাথে কাজ কর এবং সমাজের কল্যাণের জন্য স্বার্থহীনভাবে ভাগ করে নাও।

গুরু নানকের উত্তরাধিকার

গুরু নানক ১৫৩৯ সালে ৭০ বছর বয়সে মারা যান। তিনি তার পিছনে সিখ ধর্মের একটি শক্তিশালী উত্তরাধিকার রেখে গেছেন, যা আজ বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ধর্ম। সিখ ধর্মের মূল্যবোধগুলি শান্তি, সহনশীলতা, করুণা এবং সমগ্র মানবতার জন্য ভালবাসার উপর ভিত্তি করে রয়েছে।

গুরুপুরব আমাদের গুরু নানকের শিক্ষাগুলি স্মরণ করিয়ে দেওয়ার এবং আমাদের জীবনে তাদের অনুসরণ করার একটি সুযোগ। আসুন আমরা এই উৎসবটি অর্থবহ উপায়ে উদযাপন করি এবং সমগ্র বিশ্বে শান্তি এবং সম্প্রীতির প্রচার করি।

শুভ গুরুপুরব!