চাঁদু চ্যাম্পিয়ান কার্তিক আর্যন




সিনেমা হলে কখনোই ঠিকমতো বসে ছবি দেখা হয় না। অন্তত আমার হয় না। আর কার্তিক আর্যন অভিনীত 'চাঁদু চ্যাম্পিয়ান' দেখার সময়ও তাই হলো। বারবার সামনের সারিতে বসা বাচ্চাটির দিকে তাকিয়ে ফেলছিলাম। তার চোখেমুখে এমন আনন্দ আর উত্তেজনা যে, মাঝেমাঝে নিজের কচিকালের স্মৃতিগুলো ভিড় করে আসছিল বুকে।

আর কারণটাও একেবারে স্পষ্ট। না এমন কোনো জটিল গল্প বা চমকপ্রদ অভিনয় নয়, ছোট্ট এই ছেলেটির গল্পটা এতটাই সহজ, এতটাই নাড়ানোড়ানোর যে, বড় হওয়ার পরেও সেটা হয়তো তার মনে থাকবে।

আসলে ছোটদের ছবিগুলোতেই কি না জানি আলাদা একটা স্বাদ থাকে। আর সেখানেই কার্তিক আর্যনের অভিনয়টার ম্যাজিক। এতটা সহজ সরল একটা চরিত্রকেও এতটা চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারাটাই কার্তিকের সত্যিকারের সাফল্য।

ছবিতে কার্তিক আর্যন একজন মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী ছেলে। কিন্তু তার মা তার কথাগুলো বোঝেন, আর তাকে সবসময় সাপোর্ট করে যান। একদিন একটা ক্রিকেট টুর্নামেন্টে কার্তিকের দলকে দেখতে যায় তার মা। কিন্তু খেলার মাঝেই হঠাৎ করেই তার মা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন দর্শকদের সামনেই ছুটে গিয়ে কার্তিক তার মাকে জড়িয়ে ধরে। আর সেই দৃশ্যটাই এতটা মর্মস্পর্শী যে, হলের সবাই চোখের পানি চেপে রাখতে পারেনি।

সিনেমার আরেকটা দারুণ দিক হলো, এটিতে কোনো ভিলেন নেই। প্রত্যেকেই এখানে ভালো এবং সবাই চায় যে কার্তিক তার লক্ষ্য অর্জন করুক। এটি সিনেমায় একটি সতেজকর পরিবর্তন, যেখানে আমরা সাধারণত দেখতে পাই যে একজন ভিলেন নায়কের স্বপ্ন পূরণে বাধা দেয়। 'চাঁদু চ্যাম্পিয়ান'ে, এটি দলের সদস্যদের মধ্যে বন্ধুত্ব এবং বন্ধনের গুরুত্বের উপর জোর দেয়।


সব মিলিয়ে, 'চাঁদু চ্যাম্পিয়ান' সত্যিই একটি চমৎকার এবং অনুপ্রেরণাদায়ক সিনেমা। এটি এমন একটি সিনেমা যা আপনার হৃদয়কে স্পর্শ করবে এবং আপনাকে আপনার স্বপ্নের পেছনে ছুটে যেতে অনুপ্রাণিত করবে। আমি সবাইকে এই সিনেমাটি দেখার জন্য সুপারিশ করব, বিশেষ করে যদি আপনার কোনো সন্তান থাকে।