চাঁদু চ্যাম্পিয়ন ডাকনাম যার




গতকাল একটা আকর্ষণীয় টি-শার্টের সঙ্গে একটা ঘটনার কথা মনে পড়ল। টি-শার্টটা ছিল নীল রঙের এবং তার উপরে আঁকা ছিল হনুমান। হনুমানটা যেন লাফ দিচ্ছে আর লেখাটা ছিল 'চাঁদু চ্যাম্পিয়ন'। সেই টি-শার্টটা দেখে আমার বাচ্চার সময়ের কথা মনে পড়ে গেল।

তখন আমাদের গ্রামে একটি চা দোকানে এই 'চাঁদু চ্যাম্পিয়ন' লেখা টি-শার্টগুলো দেখতাম। আমরা সবাই খুব পছন্দ করতাম এই ডিজাইনটা। কিন্তু তখন আমার তেমন টাকা ছিল না। তাই কখনো কিনতে পারিনি এগুলো।

তবে আমার একটা খুব ভালো বন্ধু ছিল, যার নাম ছিল সাদ্দাম। সে ছিল আমার চেয়ে বড়। তার বাবা একজন বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। তাই সাদ্দামের টাকার অভাব ছিল না। সে আমাকে জোর করে এই 'চাঁদু চ্যাম্পিয়ন' লেখা একটি টি-শার্ট কিনে দিয়েছিল। আমি তখন খুব খুশি হয়েছিলাম।

আমি সেই টি-শার্টটা পরে খুব গর্ব অনুভব করতাম। আমার মনে হত, আমি যেন সুপারম্যান। আমি লাফ দিতে পারি খুব উঁচু, আমি দৌড়াতে পারি খুব দ্রুত। আমি ভাবতাম, এই টি-শার্ট পরলে যেন আমার সব শক্তি বেড়ে যায়।

আমি সেই টি-শার্টটা অনেকদিন পরেছি। কিন্তু এখন আর তেমন পরা হয় না। তবে সেই টি-শার্টটা আজও আমার কাছে আছে। যখনই তা দেখি, তখনই আমার বাচ্চার সময়ের কথা মনে পড়ে যায়। সাদ্দামের কথা মনে পড়ে যায়। সে এখন অনেক দূরে থাকে। কিন্তু আমাদের বন্ধুত্ব এখনও অটুট।

যে সমস্ত বন্ধুরা আমার বাচ্চার সময়ের সঙ্গী ছিল, তাদের সবার জন্যই আমার মনে আছে একটি করে গল্প। সাদ্দামের কথা বললাম। আরও তো আছে। যেমন, আমার এক বন্ধু ছিল, তার নাম ছিল মুসা। সে ছিল খুব চঞ্চল একটি ছেলে। একদিন আমরা শালুক মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। মুসা একটা মাছ ধরে ফেলে। সে সেটা নিয়ে এতো গর্বিত হয়ে গিয়েছিল যে, সে চিৎকার করে বলতে শুরু করে, 'আমি একটা শালুক ধরেছি, আমি একটা শালুক ধরেছি।' তার এই চিৎকার শুনে আর সব মাছ পালা গেল।

বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর মজাটাই আলাদা। সেই মজাটা আর কোথাও পাওয়া যায় না। আমি খুশি আমার এমন কিছু বন্ধু ছিল, যাদের সঙ্গে আমি আমার বাচ্চার সময় কাটিয়েছি।