তাইতো ভাবনা কত কিছু ঘুরেই ফিরেই আসে। আমাদের স্বপ্নগুলোকে ঘিরে অসংখ্য কল্পনা, অজস্র ইচ্ছে নিয়ে আমরা দিনের পর দিন ঘুরে বেড়াই। আমাদের মনের মাধুর্যের উদযাপন করি। সেই মনের ইচ্ছে আর স্বপ্নগুলো পূরণের জন্য কত কিছুই না করি আমরা। কিন্তু কতটুকু পূরণ হয়? সত্যিই কি মনের মতো পুরোটা জীবন চালানো যায়?
আমাদের মনের মধ্যে খুব সুন্দর কিছু প্রত্যাশা থাকে। কীভাবে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে চায় সেই বিষয়ে অনেক কিছুই ভাবা হয়ে থাকে। সেইমতো পরিকল্পনাও করা হয়। কিন্তু কাজের জায়গায় গিয়ে মনের মতো সব কিছু পাওয়া যায় না। একটা জায়গায় সবটা না হলেও অল্প কিছু হয়। আবার কোনো জায়গায় হয়তো বেশিরভাগটাই হয়। কিন্তু তার পরও সব কিছু পাওয়া যায় না। এই যে মনের কথা আর কর্মক্ষেত্রের বাস্তবতা, এর মধ্যে মিল থাকে না। আর এখানেই ঘটে সমস্যা।
এত ভাবনা, অথচ জীবনের একটা নির্দিষ্ট গতিপথ
আমাদের অনেক ভাবনা থাকে, কিন্তু জীবনের নির্দিষ্ট একটা গতিপথ থাকে। সেই গতিপথ অনুসারে জীবন চলতে থাকে। সেখানে এদিক-ওদিক করার সুযোগ থাকে না তেমন। কারণ নিয়তিও কিন্তু বড় শক্তিশালী। সে যা বলবে তাই-ই হবে। আর এখানেই আবারো জটিলতা তৈরি হয়। আমরা নিজের মতো করে জীবনটাকে চালাতে চাই। কিন্তু নিয়তি বা পরিস্থিতি আমাদের স্বাধীনতা খর্ব করে দেয়।
পরিবার, সমাজ আর সন্তান
জীবন নিয়ে ভাবতে গেলে পরিবার, সমাজ আর সন্তানকে কীভাবে এড়িয়ে যাওয়া যায়? এদের চাহিদা, সাধ, স্বপ্নের সঙ্গেও মিল রাখতে হয়। জীবন জট হয়ে যায়। সবার সুখের জন্য কখনো নিজের স্বপ্নকে বিসর্জন দিতে হয়। মা-বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য অমতেও হয়তো পড়াশোনা করতে হয়। সমাজের নিয়ম মেনে চলতে গিয়েও হয়তো নিজের ইচ্ছেগুলোকে কুঁড়িয়ে ফেলতে হয়। সন্তানের সুখের জন্য অনেক বাবা-মা নিজেদের ইচ্ছেগুলো কোনো না কোনোভাবে সীমাবদ্ধ করে ফেলেন।
অতএব, জীবন চলে মনের মতো হয় না কারণ মনের কথা আর কর্মক্ষেত্রের বাস্তবতার মধ্যে তফাৎ থাকে। নিয়তি ও পরিস্থিতি আমাদের গতিপথ নির্ধারণ করে। আর সবার চাহিদার সঙ্গে মিল রাখতে গিয়ে অনেক সময় নিজের ইচ্ছেগুলোকে দমন করতে হয়। তাই সব মিলিয়ে জীবন যে সবসময় মনের মতো চলবে, তা বলা যায় না। তবে নিজের মনের কথাগুলোকে মনের মধ্যেই সযত্নে রেখে দিলে, একদিন হয়তো সুযোগ হাতছানি দিবে।