ওষ্ঠে মৃদু হাসি, চোখে মায়ার ছলনা, মেঘের শাপলা বিছিয়ে নীল নভমণ্ডল; এটাই জুলাই, ঋতুর রানী। বস্ত্রহীন প্রকৃতির বুকের উপর ছড়িয়ে দেয় আবছায়া সবুজের শাড়ি।
গাছপালার পাতাগুলো ঈষৎ কাঁপছে, যেন এক সঙ্গীতের তালে, আর পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত হচ্ছে দিগন্ত। নদীর স্রোত শান্ত, মৃদু বাতাসে তরঙ্গ খেলে যায়।
এই সময়ে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হয় রাস্তার দুধারের গাছগুলো। শিমুল গাছে ঝুলিয়ে থাকে লাল লাল ফুল, আর রজনীগন্ধার সুগন্ধে ভরে ওঠে বাতাস। জলজ অঞ্চলের নীল শাপলা আর সাদা শাপলাও মন ভরিয়ে দেয় সৌন্দর্যে।
জুলাই মাসে কৃষকদেরও আনন্দের দিন। ধানের শিষ পেকে সোনালী রঙের হয়ে ওঠে, আর তা দেখে তাদের মনে আনন্দের জোয়ার বইতে থাকে। তারা জানেন, দুঃখের দিন শেষ, আবারও খুশির দিন আসবে।
কিন্তু জুলাইকে মন কেড়ে নেয়ার আরেকটি কারণ আছে, সেটা হল বর্ষা। মেঘগুলো যখন গর্জন করে, বৃষ্টির ফোঁটাগুলো যখন মাটিতে পড়ে, তখন প্রকৃতির সব কিছু যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।
জলের গন্ধ মাটির সাথে মিশে যায়, তৈরি হয় এক অপূর্ব সুরভি। আর বৃষ্টির পরে যখন সূর্য বের হয়, তখন তৈরি হয় রামধনু, যা জুলাই মাসকে আরও রঙ্গিন করে তোলে।
তবে জুলাই মাসের একটি কষ্টের দিকও আছে। বর্ষার দিনগুলোতে আকাশ থাকে মেঘলা, সূর্য দেখা যায় না, যার ফলে কখনও কখনও বিষণ্ণতা নেমে আসে মনে। কিন্তু এই বিষণ্ণতাও টেকে না খুব বেশিক্ষণ, কারণ জুলাই মাসের সৌন্দর্য সব ভুলিয়ে দেয়।
জুলাই, বছরের সেই ঋতু, যা প্রকৃতিকে সবচেয়ে বেশি সাজায়। সবুজের শাড়ি, নীলের আকাশ, লালের শিমুল, সাদার শাপলা, এসবই তো জুলাইকে করে তোলে ঋতুর রানী।