❝জি-সেভেন: বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সংস্থাটির পর্দার আড়ালে❞




আপনি যদি মনে করেন যে জাতিসংঘ বা বিশ্বব্যাংক গ্রহের সবচেয়ে শক্তিশালী সংস্থা, তাহলে আবার চিন্তা করুন। প্রকৃতপক্ষে, এমন একটি গোষ্ঠী আছে যাদের ক্ষমতা এতটাই অতুলনীয় যে তারা বিশ্বের ঘটনাবলীকে আকৃতি দিতে পারে, প্রায় কোন সুযোগ ছাড়াই তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহিতা। এই গোষ্ঠীটি হলো জি-সেভেন, বিশ্বের সাতটি সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির নেতাদের একটি শীর্ষস্থানীয় সংস্থা।


জি-সেভেনের সদস্যরা হলো:

  • কানাডা
  • ফ্রান্স
  • জার্মানি
  • ইতালি
  • জাপান
  • যুক্তরাজ্য
  • যুক্তরাষ্ট্র


এই দেশগুলো, সম্মিলিতভাবে বিশ্বের মোট ঘরোয়া উৎপাদনের প্রায় 46% অর্জন করে। এর অর্থ হলো, যদি জি-সেভেন বিশ্বের একটি দেশ হতো, তাহলে এটি চীনকে ছাড়িয়ে বৃহত্তম অর্থনীতি হতো।


জি-সেভেনের ইতিহাস 1975 সালে ফিরে যায়, যখন বিশ্ব অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ছিল। নেতারা একটি অ-বাধ্যতামূলক ফোরাম তৈরি করতে সম্মত হন যেখানে তারা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। প্রথম সভা ফ্রান্সের রামবুইলেটে অনুষ্ঠিত হয়, এবং গোষ্ঠীর নাম ছিল "জি-6"। সদস্যপদ 1976 সালে কানাডা যোগদানের পর "জি-7" হয়ে ওঠে।


জি-সেভেনের সভা সাধারণত বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয়, এবং প্রতিটি সদস্য দেশ順番ে আয়োজন করে। সভাগুলি সাধারণত অনানুষ্ঠানিক হয়, এবং নেতারা সাধারণত একটি পলল আলোচনার মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলি আলোচনা করেন। যদিও জি-সেভেন কোন আইন প্রণয়ন বা প্রয়োগ করতে সক্ষম নয়, তবে তার সদস্যদের সুপারিশ এবং অবস্থানগুলি প্রায়শই বৈশ্বিক বিষয়গুলির উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।


জি-সেভেন তার পর্দার আড়ালের কার্যকలాপের জন্য প্রায়শই সমালোচিত হয়। সমালোচকরা যুক্তি দেন যে গোষ্ঠীটি খুব অস্পষ্ট এবং স্বচ্ছ নয়, এবং এটি দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির চাহিদা উপেক্ষা করে। কিছু সমালোচক এমনকি G7 এর অস্তিত্বকেই প্রশ্ন তোলেন, যুক্তি দেন যে এটি বিশ্বের ঘটনাবলীকে আকৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে।


যাইহোক, জি-সেভেনের সমর্থকরা যুক্তি দেন যে গোষ্ঠীটি বিশ্বব্যাপী কার্যকর সংলাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম প্রদান করে। তারা বলেন, সদস্য দেশগুলি বিভিন্ন মান ও অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে, এবং তারা অপ্রীতিকর বিষয়গুলি আলোচনা করতে সক্ষম, যা অন্য ফোরামে সম্ভব নাও হতে পারে। সমর্থকরা জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্ব স্বাস্থ্য এবং উন্নয়ন সহ বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলির মোকাবেলায় জি-সেভেনের তথ্যপঞ্জিও সূচিত করে।


জি-সেভেনের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। গোষ্ঠীর সমালোচনা বাড়ছে এবং কিছু সদস্য দেশ তাদের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। যদিও, জি-সেভেন বিশ্বের বিষয়ে শীর্ষস্থানীয় ফোরাম হিসেবে টিকে থাকবে বলে মনে হয়। এই অস্থির বিশ্বে, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশগুলির মধ্যে সংলাপ এবং সহযোগিতার জন্য একটি ফোরামের প্রয়োজন হবে।

  • জি-সেভেনের অধিবেশনগুলি সাধারণত কোন্ সময় অনুষ্ঠিত হয়?
  • জি-সেভেনের সদস্য কতটি দেশ?
  • জি-সেভেনের প্রথম অধিবেশন কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল?
  • জি-সেভেনের সমালোচকদের কিছু সাধারণ যুক্তি কী?